চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত !

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত !

নজরুল ইসলাম ।।

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী পরিবর্তন করে এম রেজাউল করিম চৌধুরীর পরিবর্তে বর্তমান প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এবং দলীয় হাই কমান্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানায়।বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের মহামারিতে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে দলীয় নেতা কর্মীরা চরম হতাশ ও নগরবাসীও অসন্তোষ এবং মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে, এছাড়াও শুরুতে দলের অধিকংশ নেতা কর্মী পক্ষে থাকলেও বর্তমান সময়ে খোরশেদ আলম সুজন প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়ার পর সুজনের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণ যোগ্যতা রেজাউল করিমে তুলনায় সুজনের বহু বেশী বলেও উক্ত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে। খোরশেদ আলম সুজন নিজেই দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে আগ্রহী। চট্টগ্রামে এ যাবত সরকারের যত মন্ত্রী চট্টগ্রাম সফরে এসেছেন তারা সবাই সুজনের প্রশংসা করে গেছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের পক্ষে রবিবার মোহাম্মদ আরফাত নামের এক ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজনকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই একটি পোস্ট করলে পোস্টে সুজনের পক্ষে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে কয়েক হাজার লাইক ও কয়েক শতাধিক কমেন্টস এবং শেয়ার করেন। উল্লেখিত পোস্টে সাবেক সিটি মেয়র ও প্রয়াত সভাপতি এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর যোগ্য অনুসারী হিসেবে বলা হয়েছে। এরমধ্যে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা বর্তমান মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পরিবর্তে খোরশেদ আলম সুজনকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ দলীয় হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানান। 

গত ৫ আগস্ট প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। চসিকের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে এ দায়িত্ব দেন। বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ডা. শাহদাত হোসেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী আমাকে বিশ্বাস করে মনোয়ন দিয়েছে, মনোয়ন পরিবর্তন করা না করার বিয়ষটি মাননীয় প্রধামন্ত্রীর উপর নির্ভর বলে তিনি জানান।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, দলীয় নেতা কর্মীরা এবং নগরবাসী আমাকে মেয়রের চেয়ারে বসাতে চান, এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলীয় নেতা কর্মীরা এবং নগরবাসী আমার হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে তিনি জানান। 

উল্লেখ্য খোরশেদ আলম সুজন ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ১৯৮৬ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন। 

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আ জ ম নাছির উদ্দিন মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পর্ষদের মেয়াদ পাঁচ বছর। নিয়ম অনুযায়ী মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার নিয়ম থাকলেও। গত  ২৯ মার্চ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায়  ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করেন ইসি। স্থগিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি দলটির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তার বদলে নৌকার মনোনয়ন পান নগর কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

সকালের সময় ।