চীনের আকাশ করোনাভাইরাসে নিহতদের মরদেহ পোড়ানোর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে !

চীনের আকাশ করোনাভাইরাসে নিহতদের মরদেহ পোড়ানোর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে !
চীনের আকাশ করোনাভাইরাসে নিহতদের মরদেহ পোড়ানোর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

সারা পৃথিবীতে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসে চীনে সরকারি তথ্যে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬৪ জনে। করোনায় আক্রান্তের কারণে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চীন।

রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া নেই, কল-কারখানাও সব বন্ধ। তারপরও ধোঁয়াশায় ছেয়ে আছে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর। অনেকের ধারণা, সপ্তাহখানেক ধরে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা করোনাভাইরাসে মৃতদের মরদেহ পোড়ানোর কারণেই এই ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।

অধিকাংশ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে হুবেই প্রদেশে, যে প্রদেশের উহান শহরকে এ ভাইরাসের উৎসস্থল বলা হচ্ছে। দেশটির বাকি মৃত্যুর ঘটনাগুলো উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ের তিয়ানজিন শহর ও গুইঝৌ প্রদেশে ঘটেছে। এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন ঘোষণা দেয়, করোনাভাইরাসে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের মরদেহ অবশ্যই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এ কারণে দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে শেষকৃত্যে নিয়োজিত কর্মীদের। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল, বাড়িঘর থেকে করোনাভাইরাসে মৃতদের মরদেহ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলছেন।

ইউন নামে উহানের এক শ্মশানকর্মী জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০টি মরদেহ পোড়াচ্ছেন তারা। গত ২৮ জানুয়ারি থেকে তিনি ও তার প্রায় সব সহকর্মীই সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছেন।

ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। চীনের বাইরে এ ভাইরাসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ফিলিপাইন এবং হংকংয়ে।

বুধবার মৃত ৭০ জনের সবাই হুবেই প্রদেশের। এ নিয়ে প্রদেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৯ জনে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশে ১৪ হাজার ৩১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৫৬ জনের অবস্থা গুরুতর।

চীনের মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দু’জন। মঙ্গলবার হংকংয়ে ৩৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রাণ হারান। তিনি কিছুদিন আগেই করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ফিরেছিলেন। এর আগে, গত সপ্তাহে ফিলিপাইনে মারা যান উহানফেরত আরও একজন।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।