টিটিইকে মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় বরখাস্ত সমীচীন হয়নি - তথ্যমন্ত্রী

টিটিইকে মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় বরখাস্ত সমীচীন হয়নি - তথ্যমন্ত্রী
টিটিইকে মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় বরখাস্ত সমীচীন হয়নি - তথ্যমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

টিকিট ছাড়া ট্রেন ভ্রমণের কারণে রেলপথ মন্ত্রীর আত্মীয়দের জরিমানার জেরে টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) বরখাস্তের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারাই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (৮ মে) এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর কথায় রেলের টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করা ‘সমীচীন’ হয়নি।

রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয়’ দিয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করায় গত ৪ মে রাতে ঈশ্বরদী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ এর তিন যাত্রীকে জরিমানা করেছিলেন টিটিই শফিকুল। কিন্তু রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন কোনো তদন্ত ছাড়াই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনা।

রেলমন্ত্রী শনিবার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ করা তিন যাত্রীর সঙ্গে তার ‘কোনো সম্পর্ক নেই’। যাত্রীদের সঙ্গে ‘খারাপ আচরণ করায়’ শফিকুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তিনি কর্মকর্তাদের কাছে শুনেছেন। কিন্তু বিনা টিকেটের ওই যাত্রীরা যে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সে বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এরপর রোববার ফের সংবাদ সম্মেলনে এসে রেলমন্ত্রী বলেন, টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করা যাত্রীরা যে তার স্ত্রীর আত্মীয়, তা তিনি জানতেন না।

রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আয়োজিত ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, কথিত আত্মীয়দের রেলমন্ত্রীর না চেনার বক্তব্য সঠিক, তবে তার স্ত্রীর কথায় টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত সমীচীন নয়।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের ১০ ধাপ পিছিয়ে যাওয়া নিয়েও তথ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আফগানিস্তানের পেছনে দিয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-আরএসএফ নিজেরাই প্রমাণ করেছে, তাদের প্রতিবেদন বিদ্বেষপ্রসূত।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তীর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দশজন মায়ের হাতে ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

গরবিনী মা হিসেবে নাদেরা বেগম, সাজেদা খাতুন, তাসকিনা ফারুক, জ্যোৎস্না রানী ধর, লুৎফা বেগম, আখতারা খানম, ঝর্ণা ঘোষ, সুরাইয়া চৌধুরী, শারমিন আকতার ও প্রতিমা রানী দাশের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বিশ্ব মা দিবসে সকল মায়েদের প্রতি এবং বাবাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, একজন মা যেভাবে সন্তানকে মানুষ করার জন্য যে কষ্ট করে, সেটা অন্য কেউ করে না। মায়ের ভালোবাসার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। একটি আলোকিত জাতি গঠন করতে আলোকিত মা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার মা-বাবার ভরণপোষণের জন্য বিশেষ আইন করেছে। মা-বাবার ভরণপোষণ যদি না করা হয়, তাহলে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন করা হয়েছে। সে আইনের সুযোগ নিয়ে মামলাও করেছে অনেকে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এটি হয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;