দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই - এম এ মালেক

দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই - এম এ মালেক
দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই - এম এ মালেক

দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, শিক্ষা দিয়েই একমাত্র আমরা এ বিশ্বকে উন্নত করতে পারি। এ দেশকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন সাধন করতে হবে। নিজেকে দিয়েই তার সূচনাটা করতে হবে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁরাতো এ মাটির সন্তান। নিজের কর্মযজ্ঞ দিয়ে তাঁরা এ দেশকে সম্মানিত করেছেন, পাশাপাশি বিশ্ব মানচিত্রে দেশের অবস্থানকে সুসংহত করেছেন। আজ যারা মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে, সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে তারাও একদিন আলোকিত মানুষে পরিণত হবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সমিতি ফেডারেশন (বিকেএসএফ) আয়োজিত গোল্ড মেডেল মেধাবৃত্তি প্রদান ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। এম এ মালেক বলেন, একজন মা-ই পারেন তাঁর সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে। নেপোলিয়ন বেনাপোর্টের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাকে একজন ভালো মা দাও, আমি তোমাদের একটি ভালো জাতি দেবো। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে মায়েদের ভূমিকা তুলনাহীন।
এম এ মালেক বলেন, পকেটে দামি কলম অনেকেই রাখতে পারেন, কিন্তু সেই কলম যদি জ্ঞানার্জনে কাজে না লাগে, তবে তা মূল্যহীন। আর জ্ঞান অর্জন করতে হলে লেখাপড়া করতে হবে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদেরও দ্রুতগতিতে এগুতে হবে জানিয়ে এম এ মালেক বলেন, রেডিও আবিষ্কারের সময় ৫ কোটি বিক্রি হয়েছিল ৩৭ বছরে। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে লেগেছিল ১৩ বছর, ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে মাত্র ৪ বছর। আর এখন মোবাইল ফোনের কল্যাণে পুরো বিশ্বটাইতো হাতের মুঠোয়। ১৭ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১৪ কোটি সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালামের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি বলেন, বড় হওয়ার স্বপ্নটা ভেতরে লালন করতে হবে। আমরা ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখি সেটা আসল স্বপ্ন নয়, যে স্বপ্ন তোমাকে জাগিয়ে রাখে সেটিই আসল স্বপ্ন। কাজেই কাল কী হবে তা ভেবে লাভ নেই। যা করার আজকেই করতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে আজাদী সম্পাদক বলেন, আমাদের সামাজিক বন্ধনটা শিথিল হয়ে পড়েছে। সন্তানের সাথে মা বাবার মানসিক দূরত্ব বেড়ে গেছে বলেই এত ঘটনা দুর্ঘটনা ঘটছে সমাজে। সন্তানের সাথে মানসিক যোগাযোগ বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। পাশাপাশি ক্ষুদে শিশুদের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ গড়ে তুলতে তিনি আয়োজকদের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বর্তমানে শিক্ষার বিবর্তন চলছে। বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন সমিতি ফেডারেশন শিশুদের যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের সাথে সমন্বয় সাধন করে চলেছে। আগামী প্রজন্মকে নৈতিক ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তুলতে প্রতি বছর মেধাবৃত্তির আয়োজন করে চলেছে।
প্রধান বক্তা জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দিন বলেন, কর্মেই একজন মানুষের পরিচয়। কর্মই বলে দেবে, সে কোন পরিবার থেকে এসেছে। আমরা যারা নিজেদের শিক্ষিত বলে দাবি করি, তারা সন্তানদের প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিতে দেই না। প্রকৃতিকে ভালোবেসে প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তববাদী হওয়ার বিকল্প নেই।
সংগঠনের চেয়ারম্যান রাহেলা বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মো. আলতাফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগের উপ পরিচালক হাসান মাসুদ ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বেসরকারি কারা পরিদর্শক আজিজুর রহমান আজিজ। মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় গোল্ড মেডেল পেয়েছেন শহীদ মৌলভী সৈয়দ স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ জুনায়েদ বিন জালাল, সারজন স্কুল এন্ড কলেজের দ্বিতয়ি শ্রেণীর ছাত্রী মাইমুনা হোসেন তাসনিয়া এবং বিএন স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী সাপিকা মালিয়াত।