ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে বরাত পালিত, করোনা থেকে রক্ষায় ঘরে ঘরে দোয়া

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে বরাত পালিত, করোনা থেকে রক্ষায় ঘরে ঘরে দোয়া

পোস্টকার্ড ইসলাম ডেস্ক।।

প্রাণঘাতী  করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে পবিত্র শবে বরাত। তবে এবার মসজিদে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের মধ্যে মুসল্লি খুব কম ছিল। শবে বরাতের রাতে মসজিদ বা কবরস্তানের সামনেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে শবে বরাতের রাতে বিশেষ দোয়া করার সাথে সাথে কবরস্থান বা মাজারে জনসমাগম না করার জন্য দেশের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশন। খবর বাংলানিউজের।
গত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র শবে বরাত উদযাপিত হয়। হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখে দিবাগত রাতটিকে মুসলমানরা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। অনেকের মতে, মহিমান্বিত এ রাতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। মুসলমানরা এ রাতে আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকিরসহ বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে অতিবাহিত করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা মেনে মসজিদগুলোতে বেশি মুসল্লি চোখে পড়েনি। মসজিদগুলো থেকে বাসায় বসে নফল নামাজ ও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করার আহব্বান জানানো হয়। এই আহব্বান মেনে বাসাতেই নফল নামাজ, কালেমা, তওবা ও ইসতেগফার আদায় করেছেন মুসল্লীরা। আর অন্যান্যবার শিশু-যুবকেরা এই রাতে রাস্তায় দল বেঁধে বেড়ালেও এবার চিত্র ভিন্ন। বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করায় রাস্তা ছিল ফাঁকা। একইসাথে কবরস্থান ও মাজারের গেইট বন্ধ রাখাসহ কবরস্থানের ভিতর ও বাইরে জনসমাগম ছিল না।এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে শবে বরাত উপলক্ষে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ এবং মাজারে মুসল্লিদের আগমন নিয়ন্ত্রণ করতে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ, আমানত শাহ (রা.) মাজার, গরীবুল্লাহ শাহ (রা.) মাজার, সৈয়দ বদনা শাহ মিয়া (রা.) মাজারসহ খুলশী, লালখান বাজার, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, নাসিরাবাদ এলাকার মসজিদগুলো পরিদর্শন করা হয়। ৯ এপ্রিল রাতে পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন পূর্ব ঘোষণা দিয়ে পবিত্র শবে বরাতের ইবাদতসহ সব নামাজ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঘরে বসে আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা বিভিন্ন মসজিদ, মাজারে গিয়েছি। মুসল্লিরা যাতে সেখানে ভিড় না করেন- সেটি নিশ্চিত করেছি।
রাতে চান্দগাঁওয়ে অভিযানে গিয়ে ভবনের ছাদে আশপাশের কয়েকটি ভবনের লোকজনের জামায়াতে নামাজ আদায়ের চিত্র দেখতে পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব নিয়ে সচেতন করা হয়। এর আগে বিকেলে খুলশী এলাকায় অভিযান পরিচালনার সময় জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটির মসজিদে মুসল্লিদের নিয়ে আসরের নামাজ আদায়ের চিত্র দেখতে পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। করোনার এই সময়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে মসজিদে ফের জামায়াতে নামাজ আদায় না করতে মুসল্লি, ইমাম এবং মসজিদ কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়। অভিযানে সেনাবাহিনী এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা অংশ নেন।