পিএইচপির অর্থায়নে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হলো দৃষ্টিনন্দন মসজিদ

পিএইচপির অর্থায়নে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হলো দৃষ্টিনন্দন মসজিদ
পিএইচপির অর্থায়নে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হলো দৃষ্টিনন্দন মসজিদ

শিক্ষাঙ্গন ডেস্ক।।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ‘মিজানুছ ছালাম জামে মসজিদ’।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল ১১টায় বিজ্ঞান অনুষদের পাশে মিজানুছ ছালাম জামে মসজিদ উদ্বোধন করেছেন পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর মনিরুল হাসান, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন, ছোবহানিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মঈন উদ্দিন আশরাফী, জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, চবির আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাফরুল্লাহসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও শিক্ষকবৃন্দ এবং বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি একটি জিনিস হৃদয়ের গভীরে ধারণ করি আল্লাহতায়ালা কোরআনে বলেছেন, এ পৃথিবীতে ধন-সম্পদ যা কিছু আছে সবকিছুর মালিক মহান আল্লাহ। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা এসবের আমানতদার। আমরা শুধু এসবের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত, আমরা এসবের কেয়ারটেকার। বিধাতা মানবজাতিকে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন, তাঁর ইবাদত করার জন্য। এ দুনিয়ায় মানুষ ধন-সম্পদ অর্জন করলেও খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য করে যে টাকা আমরা উপার্জন করি, এর অধিকাংশই আমরা জনহিতকর কাজে ব্যয় করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী আমাকে এই মসজিদ দেখিয়ে বললেন একটা সুযোগ আছে সে সুযোগটি আপনি কাজে লাগান। ভালো কাজ সবাই করতে পারে না। আল্লাহ যাদেরকে সুযোগ দেন তারাই কেবল ভালো কাজ করতে পারে। এই মসজিদটি অনেক জরাজীর্ণ। আপনি যদি পারেন পিএইচপি ফ্যামিলির উদ্যোগে মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করে দেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা মসজিদের কাজ শুরু করি।’

সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পাওয়া সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমরা আইসিইউ বেড করে দিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করেছি। শিশুদের জন্য বিশেষ আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে। মা ও শিশু হাসপাতালে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে পিএইচপি ফ্যামিলি অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পিএইচপি অনুদান দিয়ে চলেছে। সব মানুষের খেদমতে এগিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব মনে করি। পিএইচপি ফ্যামিলির পক্ষ থেকে এ ধরনের সহায়তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’

এ সময় চবি উপাচার্য ড. শিরীন আক্তার বলেন, ‘আজকের এ দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। গত ২-৩ বছর ধরে যে মসজিদটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয়ে আসছে তা আজ দৃশ্যমান। তাই আজ আমাদের আনন্দের সীমা নেই।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করে দেয়ায় পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান উপাচার্য ড. শিরীন আক্তার।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যারা এ মসজিদে নামাজ আদায় করবেন, নিশ্চয় তাদের অন্তরের দোয়া সূফী মিজানুর রহমানের কাছে পৌঁছে যাবে। এ মহৎ কাজের সওয়াব তিনি দুনিয়া ও আখেরাতে পাবেন। আল্লাহ তাঁকে এ কাজের ফল (উপহার) দেবেন।’

উপাচার্য শিরীন আক্তার আরও বলেন, ‘আমাদের খুব বেশি আশা ছিল। আসছে রমজানে এ মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করবেন। ইবাদত-বন্দেগি করবেন। আলহামদুলিল্লাহ রোজার আগেই সেটি পূর্ণ হলো।’

এসময় পিএইচপি ফ্যামিলি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মসজিদ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পিএইচপি নির্মিত মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনের বেতন, মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় আজীবন পিএইচপি ফ্যামিলি বহন করবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

উদ্বোধন শেষে মুনাজাত ও মিলাদ পরিচালনা করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।

খালেদ/ পোস্টকার্ড ;