প্রথম প্লাজমা থেরাপি চট্টগ্রামের করোনা রোগীর শরীরে

প্রথম প্লাজমা থেরাপি চট্টগ্রামের করোনা রোগীর শরীরে
প্রথম প্লাজমা থেরাপি চট্টগ্রামের করোনা রোগীর শরীরে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত এক চিকিৎসকের শরীরে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে চট্টগ্রামে। প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের ঘটনাটি চট্টগ্রামে এই প্রথম।

আজ মঙ্গলবার (২৬ মে) সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চিকিৎসক সমিরুল ইসলামের শরীরে এ প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়।

সমিরুল ইসলাম এই (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথমে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। পরবর্তীতে ২১ মে থেকে চমেক হাসপাতালের একটি কেবিনে আইসোলেশনে আছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষের অধীনে চিকিৎসক সমিরুলের চিকিৎসা চলছে।

মঙ্গলবার সকালের দিকে চিকিৎসক সমিরুলের অক্সিজেন সিসোরেশন কমে যায়। এসময় রোগীকে দ্রুত অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ২৫০ মিলিলিটার প্লাজমা দেওয়া হয় চিকিৎসক সমিরুলের শরীরে। এই প্লাজমা কতটা কাজ করছে, ২৪ ঘণ্টা পর তা বুঝা যাবে বলে জানিয়েছেন মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা মো. তারেক নামের এক ব্যক্তির শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে এই চিকিৎসকের শরীরে দেওয়া হয়।

প্লাজমা দানকারী মো. তারেকের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। তার স্ত্রী একজন চিকিৎসক। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তাদের দুজনের সম্মতিতে মঙ্গলবার বিকেলে তারেকের শরীর থেকে এই প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়।

চমেক হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক তানজিলা তাবিদের নেতৃত্বে এই প্লাজমা সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়।

যদিও করোনা আক্রান্ত এবং সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের রক্তের গ্রুপের রেকর্ড না থাকায় চিকিৎসক সমিরুলের রক্তের গ্রুপের প্লাজমা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। চারদিকে খোঁজ লাগালেও একই রক্তের গ্রুপের পাওয়া যাচ্ছিল না। উদ্যোগী হয়ে প্লাজমা সংগ্রহের কাজটি ত্বরান্বিত করেছেন করোনা মোকাবেলায় স্বাচিপের (স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ) গঠিত কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের রক্তের কোনো রেকর্ড নেই। যে কারণে রক্তের একই গ্রুপের প্লাজমা পেতে বেগ পেতে হয়। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)-এর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম ম্যাডাম করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মো. তারেকের খোঁজ দেন। প্লাজমা সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় চিকিৎসক সমিরুলের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। ঢাকায় সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে ও কথা বলে এটি করা হয়েছে।” এর মাধ্যমে চট্টগ্রামে এই প্রথম করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর শরীরে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হলো বলেও জানান তিনি।