বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না, জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে : রওশন

বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না, জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে : রওশন

রাজনৈতিক ডেস্ক।। 

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না। বিএনপির অধীনে জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাঁচ মাস পর চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেই আগামী নির্বাচনকে ঘিরে জাপার জোট-ভাবনা নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাপা জোটবদ্ধ হবে কি না বা হলেও তা কার সঙ্গে হবে, এ বিষয়ে না বললেও পরিষ্কার জানিয়েছেন, বিএনপির সঙ্গে জোট নয়। একই সঙ্গে ঘরোয়া কোন্দল মেটানোর উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েও কথা বলেছেন রওশন।

গতকাল রোববার সকালে থাইল্যান্ড থেকে দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন রওশন এরশাদ। বেলা আড়াইটার দিকে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছার পর কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না। বিএনপির অধীনে জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জোট বিষয়ে রওশনের এমন বক্তব্য নিয়ে এরই মধ্যে দলের দুটি পক্ষের মধ্যেই নানা আলোচনা চলছে। দলের একটি সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বলয়েই রয়েছে জাপা। কাদেরপন্থী ও রওশনপন্থী দুটি পক্ষই ক্ষমতাসীনদের মন রক্ষা করে চলার চেষ্টা করে আসছে। তবে এ ক্ষেত্রে কাদেরের চেয়ে নানা কারণে এগিয়ে আছেন রওশন এরশাদ। কাদেরের অনুসারীদের মধ্যে অনেকে আছেন, যাঁরা ক্ষমতাসীনদের বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে চান। প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গেও জোট করার ইচ্ছা আছে তাঁদের। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সঙ্গে সখ্যেরও চেষ্টা করা হচ্ছে—যে কারণে নানাভাবে জাপাকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

রওশন এরশাদের সম্মেলন ডাকাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে জল অনেক দূর গড়িয়েছে। ২৬ নভেম্বর ডাকা ওই সম্মেলন স্থগিত করা হলেও তার রেশে জাপায় বিভক্তি ছড়িয়েছে। রওশনের পক্ষাবলম্বন করায় প্রেসিডিয়াম পদসহ দলের সব পদ-পদবি হারিয়েছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। জাপার বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধার করা মামলা রীতিমতো গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে জি এম কাদেরের জন্য। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জি এম কাদেরের ওপর দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। এর মধ্যেই দলীয় সব কার্যক্রমের ওপরও বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা হয়েছে। এই অবস্থায় দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন কাদের। আসন্ন রসিক নির্বাচনকে ঘিরেও সমস্যায় পড়েছেন জি এম কাদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ক্ষমতাসীনরা জাপাকে বগলদাবা করে রাখতে চায়। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে জাপাকে নিয়ে নানা খেলা শুরু হয়। এবারও সেটাই করা হচ্ছে এবং রওশনপন্থীদের কর্মকাণ্ডে তারই প্রতিফলন ঘটছে। আর ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতা করে চাপে পড়েছেন জি এম কাদের ও জাতীয় পার্টি। তিনি ও তাঁর অনুসারীরা জোট নিয়ে এখনই মুখ খুলতে চান না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন , জোট নিয়ে এখনো জাপার কোনো ভাবনা নেই ।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;