বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন শিক্ষানুরাগী মাওলানা ওবায়দুল হকের ১০২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন শিক্ষানুরাগী মাওলানা ওবায়দুল হকের ১০২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন শিক্ষানুরাগী মাওলানা ওবায়দুল হকের ১০২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

কাইয়ুম চৌধুরী, সীতাকুণ্ড ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী নেতা,সমাজকর্মী নবজাগরণের অগ্রদূত, শিক্ষার আলোকবর্তিকা প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন শিক্ষানুরাগী মরহুম শাহ সুফি হযরত মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের ১০২ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কোরআন খতম,আলোচনা সভা,দোয়া মাহফিল ও তবারক ববতরনের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়েছে।

মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের  জন্ম ১৮৫৬ সালের ৮ ই জুন। মৃত্যু - ১৯২১ সালের ৯ই জুলাই।  তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড  ইউনিয়নের মান্দারীটোলা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। উনার পিতার নাম মরহুম মাওলানা কমর আলী। মরহুম হযরত মাওলানা ওবায়দুল হক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর ভারতের নানা স্থানে লেখাপড়া করেন। যেমন ভারতের দেওবন্দ,পাঞ্জাবের চারহিন্দ,মুরাদাবাদ,শাহরান পুর প্রভৃতি স্থানে গমন করেছিলেন এবং জ্ঞানলাভ করেন ও  আরবি উচ্চ সাহিত্যে দুটি স্বর্ন পদক লাভ করেন।উচ্চশিক্ষা লাভের পর আধুনিক চিন্তায় সম্পৃক্ত মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেব দেশে ফিরে নিজেকে শিক্ষা বিস্তারে আন্ত নিয়োগ করেন। তখন অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারত, শিক্ষা দীক্ষায় মুসলমানরা ছিলেন পিছিয়ে।তাই উনার চিন্তা-চেতনায় ছিলো শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। তাই তিনি ১৮৮৬ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রথম আরবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে সীতাকুণ্ড কামিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার আলো প্রজ্বলিত করেন। এর পরবর্তীতে ১৯২১ সালে সর্ব ধর্মের মানুষের জন্য বর্তমান সীতাকুণ্ড সরকারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এই দুটি প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে অনেক  বাধা বিপত্তির শিকার হন এবং একটি কুচক্রী মহল বহুবার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এই দুইটি প্রতিষ্ঠান না হওয়ার জন্য সীতাকুন্ডের একটি মহল মাওলানা সাহেবের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দেয়। অদম্য চেতনার এই মহাপুরুষ কে মামলা হামলা সহ শত বাধা বিপত্তি কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারে নাই। মামলার সে ঐতিহাসিক রায়ও মাওলানা সাহেবের সপক্ষে আসে। বহু মক্তব বিদ্যালয়, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ছাড়াও সীতাকুন্ডের প্রাণকেন্দ্রে যে দুটি  বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উনি প্রতিষ্ঠা করেছেন তাহা আজ কালের স্বাক্ষী হিসেবে  দন্ডায়মান। একটি সীতাকুন্ড লালদিঘীর পশ্চিম পাড়ে বর্তমান সীতাকুণ্ড এম এ কামিল মাদ্রাসা, পূর্ব পাড়ে বর্তমান সীতাকুণ্ড সরকারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। 

এ উপলক্ষ্যে রবিবার ৯ জুলাই সীতাকুণ্ড এম এ কামিল মাদ্রাসায় সকালে খতমে কুরআন পাঠ ও ১১ টায় মাদ্রাসা মসজিদে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান মেহেমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্মানিত সভাপতি  সাবেক উপজেলা  চেয়ারম্যান, আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া।

উপস্হিত ও বক্তব্য রাখেন, সীতাকুণ্ড আলিয়া ( কামিল) মাদরাসার  গভর্নিং কমিটির সম্মানিত শিক্ষানুরাগী সদস্য  মসিউদদৌলা, প্রতিষ্ঠাতার প্রপৌত্র ও গভর্নিং বডির শিক্ষানুরাগী সদস্য,  দিদারুল আরম,গভর্নিং অন্যান্য সম্মানিত সদস্য বৃন্দ, সীতাকুণ্ড বাজার কমিটির সম্মানিত সভাপতি  রেজাউল করিম বাহার, অত্র প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত অধ্যক্ষ  ওসমান গনি,জুবায়দিয়া মহিলা মাদ্রাসার সম্মানিত অধ্যক্ষ  নুরুল কবির,  শিক্ষক মন্ডলি,মেহমান বৃন্দ ও অত্র মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ। বক্তাগণ আগামীতে মরহুম হযরত মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের মৃত্যু বার্ষিকী সবার অংশগ্রহণে বৃহত্তর আকারে করার প্রস্তাব করেন।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অত্র মাদ্রাসার সম্মানিত মুহাদ্দিস জনাব মাওলানা সেলিম জাহাঙ্গীর।

খালেদ/ পোস্টকার্ড ;