বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো ৪র্থ ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলা

বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো ৪র্থ ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলা
বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো ৪র্থ ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলা

প্রবাস ডেস্ক ।।

পনেরো জনের একটি দল বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এবছর ডিসি বইমেলায় যোগ দিয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে নিউ ইয়র্ক থেকে কম বেশী পঞ্চাশ জনের মতো লেখক পাঠক প্রকাশক মেলায় যোগ দিয়েছেন। মেলা বসেছিলো ভার্জিনিয়ার হলিডে ইন হোটেলের বিশালাকার হলরূমে ২৬ ও ২৭ তারিখ শনি ও রোববার। হোটেলটির নাম উল্লেখ করা হলো একারণে যে, এরা বাঙালি সংস্কৃতি লালনের যে কোন আয়োজনে চমকে যাওয়ার মতো কম মুল্যে হলরূম ও থাকার রূম ভাড়া দেয়। হোটেলের থাকার রূমগুলো এতোই কম দামে দেয়া হয়েছিলো যে, প্রায় প্রত্যেকেই কম মুল্যের সুযোগ গ্রহণ করে দুদিন বেশ আয়েশেই কাটিয়ে এসেছেন।

ডিসি বই মেলায় বাংলা‌দেশ রাইটার্স ক্লাবের অংশ গ্রহণ ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ। ক্লাবের অন্যন্য আয়োজনের মধ্যে "জনকের কথা ও কবিতা',  তিন আবৃত্তিকারের কন্ঠে দুই ছড়াকারের ছড়ার আসর " আমরা ধরাকে ছড়া জ্ঞান করি',  আলোচনা অনুষ্ঠান,' বাংলা ‌শিল্পওসংস্কৃতির লালনে ডিসি বইমেলার গুরুত্ব" , বাংলা‌দেশ রাইটার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে ডিসি বইমেলার স্বীকৃতি স্বরূপ দৃষ্টি নন্দন বিশালাকার ক্রেস্ট প্রদান- ইত্যাদি অন্যতম। 

জনকের কথা ও কবিতার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মনজুর কাদের। পরিকল্পনায় ছিলেন আসর ও ক্লাবের সভাপতি কবি মিশুক সেলিম, ছড়াকার খালেদ সরফুদ্দীন,  কবি আনোয়ার সেলিম ও লেখক আবু সাইদ রতন। প্রধান অতিথি আজীবন মুক্তিযোদ্ধা ও বিজ্ঞানী ড. নুরুন নবী, বাংলাদেশ থেকে আগত বিশেষ অতিথি মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা কমান্ডার সিরু বাঙালি, মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের অন্যতম প্রসিকিউটার আনিজী‌বি অমর ইসলাম, নৃত্য সারথী লায়লা হাসান, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্যাহ, প্রধান আলোচক ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন,  লেখক শাহান আহমেদ, কবি বদিউজ্জামান নাসিম, ডিসি বই মেলার আয়োজক দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘরীল ও আনোয়ার ইকবাল কচি।

পাঠে অংশ নেন কবি শামস আল মমীন,  আবৃত্তি শিল্পী সাবিনা নিরু, পাপড়ি বড়ুয়া, সুমন শামসুদ্দিন, আনোয়ারুল লাভলু, নুপুর চৌধুরী, কবি এবিএম সালেহ উদ্দিন,  বেনজীর সিকদার, শাহানা শৈলী, হুমায়ূন কবীর ঢালী প্রমুখ। 

ছড়ার আসর "আমরা ধরাকে ছড়া জ্ঞান  করি" সাজানো হয়েছে খালেদ সরফুদ্দীন ও মনজুর কাদের এর একগুচ্ছ ছড়া পাঠের মধ্য দিয়ে। ছড়াগুলো পড়েছেন তিন শুদ্ধ আবৃত্তি শিল্পী পাপড়ি বড়ুয়া, সুমন শামসুদ্দিন ও সাবিনা নিরু। 

বাংলা‌দেশ রাইটার্স ক্লাব যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ডিসি বই মেলা কর্তৃপক্ষকে সম্মাননা স্মারক অনুষ্ঠানটি ছিলো তুমুল করতালি ও হর্ষোল্লাসে মুখরিত। ড. নুরুন নবী ও সিরু বাঙালীর হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন দস্তগীর জাহাঙ্গীর, ড. নজরুল ইসলাম, রোকেয়া হায়দার, আনোয়ার ইকবাল কচি, নীতু মেহজাবীন, কবিতা দেলোয়ার, নুপুর চৌধুরী ও অন্যরা। ক্লাবের পক্ষ থেকে উপস্হিত ছিলেন খালেদ সরফুদ্দীন, আবু সাইদ রতন, আনোয়ার সেলিম, সাবিনা নিরু, পাপড়ি বড়ুয়া, সুমন শামসুদ্দিন, এবিএম সালেহ উদ্দিন, নাসির সিকদার, আনোয়ারুল লাভলু ও বেনজীর সিকদার। ক্লাবের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মনজুর কাদের।

বই মেলার অন্যান্য আয়োজন ছিলো ছিমছাম ও পরিকল্পিত। উপস্হাপনা মার্জিত,  যথাযথ ও শ্রুতিমধুর।  বই পরিচিতি, কবি পরিচিতি, কাব্য পঠন সহ সব আয়োজন ছিলো ছোট ছোট করে ভাগ করা।  ফলে সবার কথা ঠিকঠাক শোনা গেছে এবং অনুষ্ঠান ঝুলে যাবার আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় দর্শকদের বিরক্তি উৎপাদনের সুযোগ হয়নি। সস্তা জনপ্রিয়তা বা বিনোদনের নামে স্হুল আসরের কোনো আয়োজন ছিলো না।

শাড়ি গয়না বা খাবার স্টল মেলা প্রাঙ্গনে স্হান দেয়া হয়নি। কেবল বই ও লেখক সংক্রান্ত ছোট ছোট আসর এবং সঙ্গীতানুষ্ঠানই ছিলো মেলার মনেগ্রাহী উপকরন । কবিতা হায়দারের " কবিতার সাথে" চ্যনেলে প্রায় সকলের কন্ঠই মজুদ করে রাখা হয়েছে। 

দিনার মনির আদূরে কন্ঠের গান সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তবে নিউ ইয়র্কের বিপা প্রযোজিত অনুষ্ঠান সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিপার সোনার টুকরা শিশু কিশোর শিল্পীদের পরিবেশনা বইমেলার মাইলফলক হয়ে থাকবে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;