বিস্ফোরণে নিখোঁজ জুয়েলের ঘরে তিন দিন কোনো খাবার নেই, জেসমীন সন্তান নিয়ে বাঁচবেন কীভাবে

বিস্ফোরণে নিখোঁজ জুয়েলের ঘরে তিন দিন কোনো খাবার নেই, জেসমীন সন্তান নিয়ে বাঁচবেন কীভাবে
বিস্ফোরণে নিখোঁজ জুয়েলের ঘরে তিন দিন কোনো খাবার নেই, জেসমীন সন্তান নিয়ে বাঁচবেন কীভাবে

এসএম মিন্টু ও মেজবাহ উদ্দিন খালেদ।। 

‘বাবা-মা ছোটবেলায় মারা গেছেন। অভাব-অনটনের মধ্যে কিশোরী বয়সে বিয়ে হয় জুয়েলের সঙ্গে। আমার জীবনের সব দুঃখ-দুর্দশা ছাপিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। এতিম হওয়ার পর যিনি বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই মানুষটি নেই আজ সাত দিন। বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সব হারিয়ে এখন আমি নিঃস্ব। ঘরে কোনো চাল নেই, টাকা নেই। স্বামীকে হারিয়েছি, এখন সন্তানদের নিয়ে বাঁচব কীভাবে।’

গতকাল শনিবার বিএম ডিপোর দক্ষিণ পাশে সোনাইছড়ি গ্রামের একটি বাড়িতে নিখোঁজ জুয়েলের অসুস্থ স্ত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি আক্ষেপের সুরে এসব কথা বলেন। এ সময় প্রতিবন্ধী ছেলে ইমাম হোসেন (৪) ও মেয়ে লামিয়া আক্তার (৩) মায়ের পাশে ছিল। তারা সবাই জ্বরে আক্রান্ত।

জেসমীন আক্তার বলেন, আমার স্বামী মো. জুয়েল বিএম ডিপোর অপারেটর (আইএসটি-এসএলটি) হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে কর্মরত। ঘটনার দিন তিনি ওই ডিপোতে রাতের ডিউটিতে ছিলেন। বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ার পর অনেক ফোন করেছি। ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এখন তার লাশের অপেক্ষায় আছি।

তিনি বলেন, ঘটনার পর মালিক পক্ষ বা সরকারি কোনো সংস্থার কেউ আসেনি খোঁজ নিতে। কত মানুষ আসে, মোবাইল নম্বর নিয়ে যায়, পরে আর কোনো খোঁজ নেয় না।

অসুস্থ জেসমীন বলেন, আমার ছেলেটা মানসিক অসুস্থ। কিছুই বোঝে না। মেয়েটা এখনও ছোট। এখন তাদের নিয়ে আমি কীভাবে চলব। আমার তো কেউ রইল না। ছেলেমেয়েকে কে দেখবে। প্রতিবেশী এক নারী বলেন, জুয়েলের খোঁজে মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ছেলেমেয়ে দুটোও অসুস্থ। কেউ তাদের খোঁজ নেয় না। তিন দিন ধরে ঘরে কোনো খাবার নেই। ওষুধ কেনারও টাকা নেই। এ মাসের বেতনটা দিলেও কোনোমতে চলত।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;