মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাশফি হত্যা মামলা পিবিআইয়ে 

মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাশফি হত্যা মামলা পিবিআইয়ে 
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাশফি হত্যা মামলা পিবিআইয়ে 

বোয়ালখালী প্রতিনিধি।। 

বোয়ালখালীর চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শিশু মাশফি হত্যা মামলার কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি বোয়ালখালী থানা পুলিশ। প্রায় দেড় মাস ছিল অন্ধকারে। পুলিশের তদন্ত নিয়ে শুরু থেকেই হতাশ ছিলেন নিহতের পরিবার। শেষমেষ এখন মামলার তদন্তভার চলে গেল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ওপর।

বোয়ালখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলাটি এখন পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে মামলার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, গত ৫ মার্চ বোয়ালখালীর চরণদ্বীপে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইফতেখার মালিকুল মাশফিকে (৭) জবাই করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। চরণদ্বীপ ইউনিয়নের আল্লামা হযরত শেখ অছিয়র রহমান ফারূকী (রহ.) এতিমখানা ও হেফজখানায় এ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মাশফি ওই হেফজখানার নাজেরা’র ছাত্র। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় দেড় মাসেও মামলার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি বোয়ালখালী পুলিশ। পুলিশি তদন্তে ধীরগতিতে হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল মামলার বাদী।

মামলার বাদী ও নিহত শিশুর মামা মাসুদ খান বলেন, ‘বোয়ালখালী থানা পুলিশ শুরু থেকেই ধীরগতি ছিল। মামলার বিষয়ে কোনো খোলাসা করেনি আমাদের। পুলিশের তদন্তে আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’ নিহত মাশফির বড় ভাই ইমতিয়াজ মালেকুল মাজেদ বলেন, ‘বোয়ালখালী থানা পুলিশের তদন্তে আমরা শুরু থেকেই হতাশ ছিলাম। পুলিশ আশ্বাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। পুলিশের আশ্বাসে মনে হয়েছিল, হত্যাকাণ্ডের রহস্যা উদঘাটন করেই ফেলেছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ভাইয়ের পরনের স্যান্ডেল পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি। কিভাবে আর ভরসা পাব। মনে হয়েছিল, পুলিশ প্রভাবশালীদের চাপে তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল।’

হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে হেফজখানার তিন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, হাফেজ জাফর আহমদ (৫২), রুস্তম আলী (৩৭) ও শাহাদাত হোসেন (২৪)। এরমধ্যে জাফর ও রুস্তম পুলিশের রিমান্ডে কোন তথ্য দেয়নি পুলিশকে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও অন্য আলামতও উদ্ধার করতে পারেনি। মামলা তদন্তে পুলিশের ধীরগতির কারণে শুরু থেকেই হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিশু মাশফির পরিবার।

মাশফি হত্যার পর থেকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, খুনি চিহ্নিত ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছিল এলাকাবাসী এবং বিভিন্ন সামাজিক-শিশু সংগঠন। পুলিশের তদন্তে ধীরগতি ও হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় নানা সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে জনমনে।

হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই অন্ধকারে ছিল বোয়ালখালী পুলিশ। দুই শিক্ষকের রিমান্ডের তথ্য যাচাই-বাছাই, শিশু মাশফির পরিবারের সঙ্গে কোন পক্ষের শত্রুতা-বিরোধ রয়েছে কিনা, ছাত্র-শিক্ষক বা ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রের বলাৎকার হয়ে কিনা-এসব সূত্র নিয়ে তদন্তের কথা বলেছিল পুলিশ। কোনোভাবেই রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। শেষে মাশফির ডিএনএ টেস্টের জন্য ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;