শখের কবুতর, মাসে লাখ টাকা আয়

শখের কবুতর, মাসে লাখ টাকা আয়
শখের কবুতর, মাসে লাখ টাকা আয়

নাজমুল হাসান, নাটোর ।। 

নাটোরের সিংড়ার আবু সাঈদ শখ করে কবুতরের খামার দিলেও তা এখন তার আয়ের উৎস হয়েছে। খরচ বাদে মাসিক আয়ও কম নয়। যাত্রা শুরু ১০ জোড়া কবুতর দিয়ে। খামারে এখন কবুতর আছে ৩০০ জোড়া।

সিংড়ায় আবু সাঈদের বাড়ি বড় আদিমপুর গ্রামে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দেশীয় জাতের ১০ জোড়া কবুতর দিয়ে খামার শুরু করেন। খরচ বাদে বর্তমানে তার মাসিক আয় প্রায় লাখ টাকা।

সাঈদের খামারে বর্তমানে ইন্ডিয়ান ফান্টেল, লাহোর কালো, হলুদ, তুরিবাজ লাল, কালো, এলমন্ড, ইন্ডিয়ান নোটন, দেশি লোটন, বাঁশিরাজ কোকা, মাক্সি রেচার হুমা, সবজে গিরিবাজ, লাল, সাদা, হলুদ বোম্বাই, আমেরিকান সো কিং, কালদম, মুক্ষিলাল, সিলভার, কফি, ঝরনা শাটিন, ল্যাভেন্ডার সুয়াচন্দন, শেকড়সহ ৩০ জাতের কবুতর আছে। প্রতি জোড়া কবুতরের বাজারমূল্য ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

কথা হয় আবু সাঈদের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রথমে ২৩ হাজার টাকায় ১০ জোড়া কবুতর কেনেন। খামার শুরুর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বসতভিটায় ৮৪ ফুট লম্বা ও ১৯ ফুট চওড়া কবুতরের খামার দেখাশোনার জন্য দুজন শ্রমিক তাকে সহযোগিতা করেন। খামার থেকেই বেশি কবুতর বিক্রি হয়। এ ছাড়া ঢাকা, গাজীপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও খামারি এসে বাচ্চা কবুতর কিনে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, একসময় শুধু শখের বসে পালন করলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলে কবুতর রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব।

সাঈদের ইচ্ছা, দেশের সব জাতের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও কবুতর সংগ্রহ করা। তার এ খামার দেখে পরিচিতদের মধ্যে অনেকেই আগ্রহী হয়েছেন। তেমনি একজন নাটোরের হালসার বেলাল হোসেন।

সম্প্রতি সাঈদের খামারে এসেছিলেন কবুতর কিনতে। বেলাল বলেন, ‘দেড় মাস আগে আবু সাঈদের খামার থেকে দেড় লাখ টাকার কবুতরের বাচ্চা কেনেন। নিজে পালন করার পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছে বিক্রিও করেছেন। এতে শখ পূরণের পাশাপাশি তার লাভও হয়েছে।’

আবু সাইদের চাচা নজরুল ইসলাম বলেন, ভাতিজা একসময় শখের বসে কবুতরের খামার শুরু করলেও এখন তিনি সফল খামারি। তিনি (সাঈদ) নিজেই সবকিছু দেখাশোনা করেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন কবুতর দেখতে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা বলেন, সাঈদের খামার পরিদর্শন করে তার খুবই ভালো লেগেছে। সিংড়া উপজেলায় শতাধিক কবুতর খামার আছে। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হয়। যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত তা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। 

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজেও কবুতরপ্রেমী। ২০০০ সাল থেকে কবুতর পালন করছেন। আবু সাঈদের খামার দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। এটি সিংড়ার সবচেয়ে বড় কবুতর খামার।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;