সীতাকুণ্ডে পুকুর ভরাট করে সিআইপির প্লট বাণিজ্য

সীতাকুণ্ডে পুকুর ভরাট করে সিআইপির প্লট বাণিজ্য
সীতাকুণ্ডে পুকুর ভরাট করে সিআইপির প্লট বাণিজ্য

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে প্রকাশ্যে প্লট বিক্রি করছেন সীতাকুণ্ডের মোহাম্মদ আলী নামে এক সিআইপি। সীতাকুণ্ড পৌর সদরের উত্তর বাজারের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে লাগোয়া এই পুকুরটি ছিল এই এলাকার আশপাশের কয়েকশ মানুষের ব্যবহার্য। কিন্তু জায়গা জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পুকুরটি ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করছেন মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে প্রভাবশালী মহল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে শতবর্ষী পুকুর ভরাটের অভিযোগে গত বছরের ৯ আগষ্ট গভীর রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আশরাফুল আলম পুলিশের সহায়তায় যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুটি স্ক্যাভেটর ও দুটি ড্রাম ট্রাক জব্দ করেন তারা। অভিযান চলাকালীন মোহাম্মদ আলী নিজেকে সিআইপি পরিচয় দিয়ে অনেক প্রভাবশালী বলে দাবি করেন।

এ সময় তিনি ভরাট করা পুকুর কাগজপত্রে নাল জমি বলে দাবি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার কাছে খতিয়ান দেখতে চাইলে বাসা থেকে নিয়ে আসার কথা বলে সে সময় সটকে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে দুই দিন পর পুকুরটি আর ভরাট করবেনা মর্মে মুচলেকা দিয়ে ও ১ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে স্ক্যাভেটর ও ড্রাম ট্রাক মুক্ত করেন। এর পর গত কয়েকমাস ভরাটের কাজ বন্ধ রাখেন তিনি। এর মধ্যে গত কয়েকদিন আগে আবারও রাতের অন্ধকারে পুকুরটির অবশিষ্ট সম্পূর্ণ অংশ ভরাট করে ফেলেন। এমনকি গেট বানিয়ে প্লট বিক্রির উম্মুক্ত বিজ্ঞাপনও টাঙিয়ে দেন।

স্থানীয় আশেপাশের কয়েকশত মানুষের ব্যবহারের পুকুরটি ভরাট করায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বুধবার সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে প্রশাসনের উপর ক্ষোভ ঝাড়েন তারা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা আদায় ও মুচলেকা নেওয়ার পরও কিভাবে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি ভরাট করা হয়। তাহলে কি ভরাটকারীরা সরকার ও প্রশাসনের চেয়েও শক্তিশালী!

তারা বলেন, এদিকের অন্তত ১ কিলোমিটার এলাকায় কোথাও আগুন লাগলে এই পুকুরটিই ছিল ফায়ার সার্ভিসের পানির প্রধান উৎস।

পুকুর ভরাট প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলীর ভাই ইয়াকুব আলী মুঠোফোনে বলেন, প্রশাসন আমাদের পুকুর ভরাট করতে নিষেধ করেনি। এমনকি আমাদের কোন জরিমানাও করা হয়নি। জায়গাটি পুকুর থাকলেও এটি খতিয়ানে নাল জমি শ্রেণিভুক্ত। সরকারকে কোটি কোটি টাকা রেমিট্যান্স দিচ্ছি আমরা। অনেকগুলা ভালো কাজ আমরা করেছি। একটা পুকুর ভরাটের জন্য আপনারা আমাদের বিরক্ত করছেন কেন?

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম বলেন, পুকুর ভরাটের খবর পেয়ে মাঝরাতে অভিযান চালিয়ে আমরা স্ক্যাভেটর ও ট্রাক জব্দ করেছিলাম। পরবর্তীতে মুচলেকা ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মুচলেকা দেওয়ার পরও পুকুর ভরাট করে থাকলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;