সীতাকুণ্ডে প্রাণি চিকিৎসা ব্যাহত ,উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে ১ বছর ধরে লাইভস্টকসহ শূণ্য পদ ৪

সীতাকুণ্ডে প্রাণি চিকিৎসা ব্যাহত ,উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে ১ বছর ধরে  লাইভস্টকসহ শূণ্য পদ ৪

এম কে মনির, সীতাকুণ্ড।।

সীতাকুণ্ডে জনবল সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে প্রাণি চিকিৎসা। দীর্ঘ ১ বছর ধরে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে শূন্য রয়েছে ৪ টি পদ। তন্মধ্যে উপজেলা লাইভস্টক কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটিও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি রয়েছে। ফলে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না এ উপজেলার অসংখ্য খামারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। অন্যদিকে শূণ্য পদ থাকায় কাজের বাড়তি চাপ ও নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খেতে  হচ্ছে কর্মরতের।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে সাধারণত দুজন বিসিএস ক্যাডার থাকে। একজন উপজেলা লাইভস্টক অফিসার অন্যজন ভ্যাটেরেনারি সার্জন। এছাড়া এফএআই(কৃত্রিম প্রজনন পরিদর্শক) ১ জন,উপজেলা প্রাণি স্বাস্থ্য ১ জন,এমএলএসএস ১ জনসহ মোট ১০ টি পদ থাকে। কিন্তুু বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলা  প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে ১০ টি  পদের মধ্যে উপজেলা লাইভস্টক কর্মকর্তা, এফএআই,উপজেলা প্রাণি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা,এমএলএসএসসহ মোট ৪ টি  পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদে এক বছর ধরে নেই কোন নিয়োগ কিংবা বদলি। উপজেলা লাইভস্টক কর্মকর্তার পদটি শূন্য হওয়ায় সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রাণি চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে অদক্ষ ও মৌখিক ঔষধ ব্যবসায়ীদের দারস্থ হতে হচ্ছে খামারীদের,যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের সেবায় অপর্যাপ্ততা রয়েছে বলে জানান সীতাকুণ্ডের একাধিক গরু ও ছাগল খামারী।

সীতাকুণ্ড উপজেলার পৌরসভা,বাড়বকুণ্ড, বারৈয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, সলিমপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারীরা জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের যেই সেবা সেটি আমরা আশানুরূপ পাচ্ছি না। অনেক সময় গরু ও ছাগলের রোগ বুঝতে আমাদের কষ্ট হয়। সেসময় কি ঔষধ খাওয়াতে হবে তা না জানলে বিপদে পড়ে যাই। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না দিলে গরু অথবা ছাগল মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। খামারীরা আরো বলেন, পশু পাখি অসুস্থ হলে আমরা বাজারের অদক্ষ ফার্মাসিস্টদের শরণাপন্ন হতে হয়।অন্যদিকে পশু পাখির রোগের ভ্যাকসিনও বাজার থেকে চড়া দামে কিনতে হয়।খামারীরা আরো বলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ থেকে কর্মকর্তারা এসে দেখে গেলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।যাতায়াতের কারণে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে গরু-ছাগল আনা নেওয়া বেশ দূর্ভোগের। সীতাকুণ্ডের  একাধিক গরু-ছাগল পালনকারী জানান,প্রতি মাসে ভ্যাকসিন,ভিটামিনসহ চিকিৎসা বাবদ ২-৩ হাজার টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য বাড়তি চাপ।বাজার থেকে ভূষি,ছোলা কেনার পাশাপাশি এসব ঔষধ কিনতে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারিদের।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা ভ্যাটেরিনারি সার্জন(ভিএস) ডাঃ শাহজালাল মোঃ ইউনূস বলেন, দপ্তরে এখন চারটি পদ শূন্য রয়েছে। লাইভস্টক অফিসার পদটি ১ বছর ধরে শূন্য। এছাড়া প্রাণি স্বাস্থ্য, এফএআই,এমএলএসএস পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। লাইভস্টক অফিসার না থাকায় আমাকে বাইরে বিভিন্ন সময় সভা-সেমিনারে যোগ দিতে হয়।অনেক সময় অনেক খামারী যেতে বললেও পারিনা।তিনি আরো বলেন, এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হলে উপজেলায় প্রাণি স্বাস্থ্য সেবা আরো বেগবান হবে। খামারীদের আশানুরূপ চিকিৎসা সেবা দিতে সক্ষম হবো।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্য মতে সীতাকুণ্ডে সপ্তাহে শতাধিক পশু পাখি পালনকারী ও খামারীদের চিকিৎসা ও যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই হিসাবে প্রতি মাসে ৪ শতাধিক খামারী প্রাণি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করছে।