সীতাকুণ্ডে প্রিমিয়াম শীপ ইয়ার্ডে শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য !

মালিকপক্ষ বজ্রপাতে মারা গেছে বললেও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলছে জাহাজ ভাঙ্গার কাজ করার সময় মারা গেছে ।

সীতাকুণ্ডে প্রিমিয়াম শীপ ইয়ার্ডে শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য !
সীতাকুণ্ডে প্রিমিয়াম শীপ ইয়ার্ডে শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য !

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বারাউলিয়ায় অবস্থিত প্রিমিয়াম ট্রেড কর্পোরেশনে কর্মরত মো. জলিল নামে একজন শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় রোববার (৬ জুন) আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ বজ্রপাতে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করলেও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এত দিন কোন শ্রমিক মারা গেলে হার্ট এটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে মালিক পক্ষ থেকে প্রচার করা হত। এখন শ্রমিকদের মৃত্যুর জন্য নতুন কারণ বজ্রপাত যুক্ত করে মালিক পক্ষ নিজেদের দায় এড়ানোর নতুন কোন কৌশল নিয়েছেন। প্রচন্ড বৃষ্টিপাত এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শ্রমিকদেরকে জাহাজ ভাঙ্গার কাজে নিয়োজিত রেখে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন মালিক পক্ষ।’

জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত এবং যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে মু. শফর আলী ও এ এম নাজিম উদ্দিন সোমবার (৭ জুন) এক যুক্ত বিবৃতির মাধ্যমে এসব কথা বলেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘২০২০ সালে ১০ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন এবং ৩০ জনের বেশী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। ২০২১ সালে নিহত মো. জলিলসহ মোট ৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদ প্রমাণ করে যে, বার বার দাবি জানানো সত্বেও জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকেরা চরম অনিরাপদ কর্ম পরিবেশে কাজ করছে।’

শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘প্রতি বছর জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প খাতে কাজ করতে গিয়ে প্রচুর শ্রমিক আহত ও নিহত হচ্ছে অথচ সরকার, প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং মালিক পক্ষ জাহাজভাঙ্গা শিল্প খাতে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না, যা শ্রমিকদের জীবনের প্রতি চরম অবহেলা এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’

নেতৃবৃন্দ জাহাজভাঙ্গা শিল্প খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনমান রক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকার ও মালিক পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দ নিহত শ্রমিককে ‘লস অফ ইয়ার আর্নিংস, সাফারিংস এন্ড পেইন’ এর ভিত্তিতে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং শ্রম আইনের ৯৯ ধারা এবং জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরন আইন ২০১৮ এর ২০ ধারা অনুযায়ী গ্রুপ ইন্সুরেন্সের ২ লাখ দেয়ার দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ একই সাথে নিহতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।