সীতাকুন্ড পাহাড়ের ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ করছে কেএসআরএম

সীতাকুন্ড পাহাড়ের ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ করছে কেএসআরএম
সীতাকুন্ড পাহাড়ের ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ করছে কেএসআরএম

বিশেষ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম।।

সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে পাহাড়ের ঝিরিতে অবৈধভাবে পাকা বাঁধ নির্মাণ করে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছে কেএসআরএম এবং টিকে গ্রুপ নামের শিল্প প্রতিষ্ঠান। এবং মোটর ব্যবহার করে অবৈধভাবে পানি উত্তোলন করছে তারা। এর ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে মারাত্মক হুমকীতে পড়ছে জীববৈচিত্র অন্যদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে এলাকায় বসবাসকারীরা। শুষ্ক মৌসুমে পানির এই সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব অপকর্ম নিবিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা। এসব শিল্প কারখানার কর্মকর্তাদের সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ থাকায় অনেক সময় দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ এমনকি অনৈতিক লেনদেন থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কুমিরায় অবস্থিত কেএসআরএম এর প্রতিষ্ঠানটি কারখানা  থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে পাকা দেয়ালের মাধ্যমে বাধ নির্মাণ করে পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে  পাম্প মেশিন ও মোটর ব্যবহার করে পাইপের মাধ্যেমে একটি পুকুরে পানি জমা করে। সে পুকুর থেকে পাশের আরেকটি সরকারি পুকুরে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে থেকে প্রতিষ্ঠানটির পূর্ব পাশে রেললাইন এর পাশে পানির ট্যাংক এ জমা করা হয়। যেখানে প্রায় চারটি বিশাল ট্যাংক রয়েছে। একটি ট্যাংক ১০০ মিটার প্রস্থ যার গভীরতা প্রায় ২০ মিটার। যেখানে প্রায় ২৬ হাজার লিটার পানি মজুত রাখা হয়।

এলাকার বাসিন্দা মো রফিক জানান, আমরা খাবার পানি সংকটে ভুগছি। এই এলাকায় পানি পাওয়া যায়না। অন্য এলাকা থেকে প্রতি লিটার ৫টাকা করে পানি কিনে এনে খেতে হয় আমাদের। এলাকায় অবস্থিত টিকে গ্রুপ ও কেএসআরএম তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য পাহাড়ের ঝিরি থেকে পানি উত্তোলন করছে। যার ফলে পানির  লেয়ার দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে আর  পানির হাহাকার বাড়ছে।

পানির তীব্র সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব দিদারুল আলম বলেন যদি কেউ সরকারি নিয়ম অমান্য করে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ করে তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।  সরকারি কোন কর্মকর্তা অন্যায় কাজে সহযোগীতা করলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাহাড়ের ঝিরিতে পাকা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়ে জানতে কেএসআরএম এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত ও মিডিয়া এডভাইজার মিজানুল ইসলাম এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

এব্যপারে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো মোয়াজ্জেম হোসাইন বলেন  পাহাড়ের ঝিরিতে পাকা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা মারাত্মক অপরাধতো বটেই এই কাজের জন্য অনুমতি দেওয়ারও কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ এধরনের অপরাধ করে থাকে আমরা খুব শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নিব।