সীতাকুন্ডে লোহার ঝনঝনানিতে নির্ঘুম কাটছে কামারদের রাত

সীতাকুন্ডে লোহার ঝনঝনানিতে নির্ঘুম কাটছে কামারদের রাত

নাছির উদ্দিন শিবলু, বিশেষ প্রতিবেদক ।।

ঈদুল আযহার আগমনী বার্তা দিতে সীতাকুন্ডে শুরু হয়েছে লোহার ঝনঝনানী। দিন-রাত লোহার ঝনঝনানীতে মুখরীত হয়ে উঠেছে কামার পাড়া। এ সময় অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কামাররা। করোনার মন্দভাবের পর কিছুটা স্বস্থি  ফেরাতে অদম্য প্রচেষ্টা কামারদের। তাই বিগত দিনের অভাব গুছিয়ে নিতে পার করছে ব্যাস্ত সময়। যদিওবা পেছন থেকে টেনে আছে অভাব পুরন করতে না পারার শংশয়। এরপরও মুনাফার আশায় ঝলঝল করছে চোখ-মুখ। তাইতো লোহার গরম ছ্যাকা সবার জন্য হয়ে উঠেছে আর্শিবাদ। কারন এ সময় ব্যবসা করতে না পারলে হয়ত বা সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তাইতো স্ত্রী-সন্তানদের মুখে দু-মুঠো অন্ন তুলে দিতে কাটাতে হচ্ছে নির্ঘুম রাত। দিনের বেলা উপজেলার নানা বাজারে দা-ছুরিসহ নানাবিধ সংসারে ব্যবহায্য সরঞ্জাম তৈরীতে হরদম চলছে কঠুর খাটুনি। এতটুকু বিশ্রাম নেই বন্ধু,পরিবার বা সহপাঠিদের সময় দেয়ার। সবার মাঝে শুধু একটি চেষ্টা ঈদের পূর্বে বেশী সরঞ্চাম তৈরী করা আর সব চেয়ে বেশী লাভটা ঘরে তুলা। শত কষ্টকে মাথায় সহ্য করে ভাল ফলটা ঘরে তুলে অভাবের সংসার গুছিয়ে আনাটা হয়ে উঠেছে একমাত্র লক্ষ্য।

উপজেলা প্রতিটি কামার পাড়াতে রাত-দিন হয়ে গেছে এক রকম। চুলায় আগুনে গরম লোহা লাল করে ছোট-বড় হাতুড়ি বা হেমারে থেতলে নানা আকৃতি কোরবানি সরঞ্জাম তৈরীতে ব্যবস্তা সবার। যত বড় এবং ধারালো সরজ্ঞাম বানানো যাবে তত বেশী লাভ উঠবে ঘরে। তাই অধিক পরিশ্রমের সফলতার ফল ঘরে তুলতে নাওয়া- খাওয়া ছেড়ে বিশ্রমকে দুরে ঠেলে কোরবানীর পশু কাটার সরঞ্জাম তৈরীতে সরগম কামার পাড়ার নারী-শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যুবক-যুবতীরা। সব স্থানে মুসলিম মস্প্রদায়ের নেয় কামার ঘরেও যেন বইছে আনন্দেও বন্যা। ঘরে নারীরা আর বাইরে যুবক-বয়োজেষ্ঠদের ব্যস্ততার মাঝে দিন পার করতে হচ্ছে বলে জানান কামার পাড়ার বাসিন্দারা।  

পৌরসদরে ব্যবসায়ী কামার   বলেন,‘ দা,ছুরি, বটি ও কৃষি সরঞ্জাম তৈরীর এবং সান দেয়ার মাধ্যমে চলে সংসারের বরন-পোষন। বছরে দু-একটি সময় ছাড়া ব্যবসা অনেকটা একই রকমে চলে। দৈনন্দিন আয় যা হয়ে থাকে তাতে চলে না সংসার। পুরো বছর কোরনাবী ও পাঠা বলির অপক্ষায় থাকি। কারন এ সময়ে বাড়তি আয় করে সংসারে নতুর কিছু আসবাব কেনার সুযোগ হয়। তবে এ বছরের শুরুতে করোনা মহামারীর কবলে পড়ে অতি কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে। এই ঈদকে ঘিরে ব্যবসা করা না গেলে অভাবের তাড়নায় ছেড়ে দিতে হবে ব্যবসা। কোরবানীর মাত্রা কমে গেলে ব্যবসাও কমে যাবে। মূলবান লোহায় করোবানির সরঞ্জাম তৈরী করতে গিয়ে বেশী পুজি খাটাতে হচ্ছে। এখন পুজি উঠাতে না পারলে লোকসানের বিলিন হয়ে যাবে পেশা। 

প্রায় ৮০-১’শ টাকা কেজি দরে লোহা ক্রয় করে চালাতে হচ্ছে ব্যবসা। একেকটি কোরবানী সরঞ্জাম তৈরীতে ১-৫ কেজি পর্যন্ত লোহার ব্যবহার করতে হয়। পরিশ্রম আর লোহার দাম মিলে লাভ পাওয়া খুবই মুশকিল। বর্তমানে ছোট আকৃতির ছুরি মূল্য ৫০-১’শ টাকা,দা- বটি ২-২’শ ৫০ টাকা এবং বড় আকৃতিগুলোর বিক্রয় মূল্য ৫-৬;শ টাকা।