স্বাগতম২০২০, নতুন বছর এলো আশা-প্রত্যাশার ডালি হাতে

স্বাগতম২০২০, নতুন বছর এলো আশা-প্রত্যাশার ডালি হাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের একটি কলি ,‘যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে রইব কত আর’। ২০১৯ সালের চাওয়া পাওয়ার হিসাব মেলানোর দিন শেষ করে নতুন ইংরেজি বছর ২০২০ পা দিল আজ। যাত্রা শুরু হলো আশা-প্রত্যাশার আলোকবর্তিতায় আগামী দিনের পথ চলা। নতুন বছরটা কেমন যাবে অনেক জ্যোতিষী আগাম পূর্বাভাস দেন। কিন্তু এই পূর্বাভাসের চেয়ে বাস্তবতাই অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতার দাবি রাখে।

আলাদাভাবে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বছরের প্রথম দিনেই পর্দা ওঠছে আন্তর্জাতিক ঢাকা বাণিজ্য মেলার। এই মেলাকে ঘিরে পুরো মাস জুড়ে প্রাণচাঞ্চল্য থাকবে ক্রেতা আর বিক্রেতাদের মধ্যে। আবার পরের মাসে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা একাডেমির বই মেলাতে তৈরি হবে পাঠক, লেখক আর প্রকাশকের এক মিলনমেলা।
নতুন বছরের প্রথম দিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আনন্দের দিন। তাদের হাতে উঠবে নতুন বই। নতুন বইয়ের গন্ধ মন ভরিয়ে দেয়। তাই নতুন বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা। এটি অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের কাছে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে ।
এই বছরেই বাঙালির মহান নেতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বছরটিকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সরকার মুজিব বর্ষ উদযাপনের জন্য বর্ণাঢ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ১০ জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। ১৭ মার্চ বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। ওই অনুষ্ঠানে একাধিক বিশ^নেতা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশে^র বেশ কয়েকটি দেশের নেতাসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ইরিনা বুকোভা, আরব লীগের সাবেক মহাসচিবসহ আরও অনেকে। আমন্ত্রণের তালিকায় আরও রয়েছেনÑ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ভারতের কংগ্রেস পার্টির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো,মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ^ জুড়ে নানা আয়োজন থাকছে বঙ্গবন্ধুর শতজন্মবার্ষিকীতে। এমনকি, ইউনেস্কো সদর দফতর প্যারিসেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে এই বছরে। ফুটবলের কিংবদন্তি ম্যারাডোনা আসছেন এই অনুষ্ঠানে।
নতুন বছরেই হতে যাচ্ছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। বছরের প্রথম মাসেই দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে বছরের শুরুতেই উত্তাপ রাজধানী ঢাকা শহর। এ যেন রাজধানীবাসীর আশা-প্রত্যাশার প্রতীক হয়ে জ¦লে উঠবে নতুন এক অধ্যায়।
নতুন বছরেই মাদক রুখতে নেওয়া হচ্ছে নানা কর্মসূচি। ইতোমধ্যে সংস্থার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্লোগান তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, মাদক রুখব, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ব।
নতুন বছরে মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য একটি সুখবর রয়েছে। আর তা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক কল রেট কমানোর আভাস দিয়েছে বিআরটিসি।
পদ্মা সেতু দিনে দিনে দৃশ্যমান হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৬টি পিয়ার শেষ হয়েছে। আগামী এপ্রিলে আরও দৃশ্যমান হবে। অর্থাৎ নতুন বছরে পদ্মা সেতু আশার আলোর ঝলকানি দেবে।
নতুন বছরে সরকারের মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের আভাস রয়েছে। অর্থাৎ পুরনোদের ভিড়ে আরও নতুন মন্ত্রী যুক্ত হতে পারে। তবে এটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আগে হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সরকারের প্রশাসনেও বেশ কিছুটা রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সারা বছর ধরে মুজিব বর্ষ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।
যানজট কমাতে সরকারের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার কোনো শেষ নেই। এরই জ¦লন্ত উদাহরণ মেট্রোরেল। যা ঢাকাবাসীর জন্য একটি স্বস্তিদায়ক সংবাদ বয়ে আনছে।
নতুন বছরে প্রত্যাশার সঙ্গে আলোর দেখা মিলবে,তা সবার কাম্য।