সহসাই মন্ত্রিসভায় যাবে গণমাধ্যমকর্মী আইন : তথ্যমন্ত্রী

সহসাই মন্ত্রিসভায় যাবে  গণমাধ্যমকর্মী আইন  : তথ্যমন্ত্রী
সহসাই মন্ত্রিসভায় যাবে গণমাধ্যমকর্মী আইন : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দ্রুত চাকরিচ্যুতি, নিয়মিত বেতন না হওয়া, চাকরির সুরক্ষা না থাকাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তথ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নেতারা।

সংগঠনটির নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে গণমাধ্যমের ‘সঙ্কট’ এবং নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন।

ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, “যখন-তখন সাংবাদিকদের চাকরি চলে যাচ্ছে। অনেক মাস বেতন হয় না। গণমাধ্যমগুলোতে অস্তিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।”

সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা ‘প্রায় শূন্যের কোঠায়’ নেমে গেছে মন্তব্য করে ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি নজরুল কবীর সাংবাদিকদের সুরক্ষার দাবি জানান।

তিনি বলেন, “সাংবাদিক না খেয়ে থাকলে, চাকরির নিশ্চয়তা না থাকলে এর থেকে বেদনার কিছু হতে পারে না।”

ডিআরইউ’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ তথ্যমন্ত্রীকে বলেন, “আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর-রুনি হত্যার আট বছর পূর্ণ হবে। তার আগে আপনি খবর নেন এই মামলার কী অবস্থা, আমরা প্রত্যাশার কথা শুনতে চাই।”

ঢাকার প্রতিবেদকদের এ সংগঠনের কিছু সদস্যকে আইসিটি আইনের মামলায় ‘জড়ানো হয়েছে’ মন্তব্য করে এর প্রতিকারের জন্যও তথ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আজাদ।

ডিআরইউ নেতারা তাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ সংগঠনটির উন্নয়নে তথ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চান। সবার বক্তব্য শুনে তথ্যমন্ত্রী তাদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য তৈরি গণমাধ্যমকর্মী আইন সহসাই মন্ত্রিসভায় যাবে।

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১১ বছর আগে পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে সাতশ’। এখন তেরশ’র বেশি; টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন ৩৪টি সম্প্রচারে আছে এবং ৪৫টির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে ১১ বছর আগে হাতেগোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল। এখন কয়েক হাজার অনলাইন পত্রিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংবাদিকের সংখ্যাও বেড়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকাল প্রচুর গণমাধ্যম হওয়ার কারণে বিশেষ করে অনলাইন, সেগুলোর কারণে দেখা যাচ্ছে অনেকেই যারা সত্যিকার অর্থে সাংবাদিক হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন না, তারাও অনেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, বিশেষ করে অনেকগুলো অনলাইনের ক্ষেত্রে এগুলো হচ্ছে, সেখানে ব্যাপক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

‘যারা সাংবাদিক হওয়ার যোগ্য নয় কিংবা আসলে তারা সাংবাদিক নয়, কিন্তু একটা অনলাইন খুলে বসে একটা কার্ড বানিয়ে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, গুটিকয়েক লোকজনের জন্য বৃহত্তর সাংবাদিক পরিবারের বদনাম হয়। এটি যাতে না হয়, সেটির একটি উপায় সম্মিলিতভাবে সবাইকে খুঁজে বের করা প্রয়োজন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। আরেকটি সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে নিবন্ধন দেওয়া শুরু হবে। নিবন্ধন দেওয়া হলে ভুঁইফোড় অনলাইন স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে অনলাইন হিসেবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য নয়, ভিন্ন উদ্দেশ্যে যেগুলো খোলা হয়েছে সেগুলোর ডোমেইন বন্ধ করে দেব।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাগর-রুনি হত্যার বিচার নিয়ে আমরা তাগাদা দিতে পারি। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। আপনাদের হয়ে আমি আবারো কথা বলবো, যাতে এটি তাড়াতাড়ি সমাধানে পৌঁছে যায়, রহস্য উদঘাটিত হয়। নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়ে একজন দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করবো সংবাদপত্রের মালিক বা পরিচালনা পক্ষ সহসা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করবে। কারণ ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করলে সেখানে যারা কাজ করে শুধু তারাই লাভবান হবে না, প্রকৃতপক্ষে পুরো সংবাদপত্র পরিবার লাভবান হবে। এতে করে সাংবাদিকরা কাজ করতে উৎসাহ বোধ করবেন।