হালদা নদী ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা হচ্ছে - প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

হালদা নদী ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা হচ্ছে - প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

 

নিজাম উদ্দিন লাভলু , রামগড় ।।

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাতিরজনক শেখ মুজিবুর রহমনের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার এ সিদ্ধান্তের অনুমোদনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদীকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের। এদিকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ায় হালদা নিয়ে নতুন করে তোড়জোর শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হালদা নদীর উৎপত্তিস্থলসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে নদীটির বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।

খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের বেলছড়ি নামক দুর্গম এলাকার হাসুকপাড়া পাহাড় থেকে হালদা নদীর উৎপত্তি হয়ে মানিকছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারি উপজেলার মধ্যদিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে। অপার জীব বৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল,কালিগনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া বিশ্বের একমাত্র এই জোয়ারভাটার নদী থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিত্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়।

রামগড় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন জানান, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহি হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করার অনুমোদনও দিয়েছেন। এ কারণে নদীটির প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) ড. খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গত বুধবার উৎপত্তিস্থল থেকে বিভিন্ন এলাকায় নদীর বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে দেখে গেছেন। নদীর দুই পাড়ের উপজেলাগুলোতে স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন মিটিংও করেেেছন। রামগড় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাশ বলেন, হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা উৎপত্তিস্থল হিসেবে রামগড় তথা খাড়াছড়িবাসির জন্য একটি গর্বের বিষয়। তিনি বলেন, এ নদীর সার্বিক উন্নয়নে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে।

এদিকে, হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের নদীবান্ধব নাগরিকদের জন্য সুখবর উল্লেখ করে হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, এ ঘোষণা নদী রক্ষা কমিটির বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনের আরেকটি সফলতা। তিনি এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, হালদা নদীর উৎস, সম্পদ, ঐতিহ্য এবং অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনা করলে এ নদী বাংলাদেশের জাতীয় নদীর স্বীকৃতি পাওয়ার উপযুক্ত। বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার ফলে হালদা নদী নতুন প্রাণ ফিরে পাবে এবং মৎস্য সম্পদসহ জীব বৈচিত্র রক্ষা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।