হালদার নবনির্মিত বেড়িবাঁধ ধসে পড়লো

কেশব কুমার বড়ুয়া, হাটহাজারী ।।

হালদার নবনির্মিত বেড়িবাঁধ ধসে পড়লো
হালদার নবনির্মিত বেড়িবাঁধ ধসে পড়লো

হালদা নদীর নবনির্মিত বেড়িবাঁধ ধসে পড়েছে। হাটহাজারীর ২নং ধলই ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নবনির্মিত বেড়িবাঁধ গত কয়েকদিন আগে দিবাগত রাতে বিকট শব্দে প্রায় ১ শ মিটার অংশ ধসে পড়ে। বিকট শব্দের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দেয়। এলাকার অনেকেই তাড়াহুড়া করে ঘুম থেকে উঠে যায়। বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার লোকজনের শোরচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন।
স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক মাস পূর্বে হালদা নদীর ভাঙন রোধের জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। উপজেলার মদুনাঘাট থেকে হালদা নদীর হাটহাজারী অংশে প্রায় ২২ কিলোমিটার নাজিরহাট পর্যন্ত ২ শ ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। গত কয়েক দিন পূর্বে উল্লেখিত স্থানে বেড়িবাঁধ দিবাগত রাতে বিকট শব্দে ধসে পড়ে।
এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন মাস্টার জানান, এ এলাকায় নদী খুব গভীর। তাছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে বাঁধের পশ্চিমাংশের ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার কারণে বৃষ্টির পানি গর্তে জমে থাকে। ফসলি জমির মাটি কাটা অংশে গর্তে জমে থাকা পানি নদীতে ভাটার সময় বেড়িবাঁধের নিচের অংশ দিয়ে সরতে গিয়ে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য পাশে সিমেন্টের ব্লক নির্মাণ করে রাখা হয়েছে। ব্লকগুলো বাঁধ নির্মাণের সাথে সাথে স্থাপন করা হলে তাহলে এত বড় বিপর্যয় ঘটত না। বেড়িবাঁেধর ধসে যাওয়ার অংশের বাসিন্দা মো.শাহাজাহান জানান, রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে বেড়িবাঁধ ধসে পড়লে এলাকার মধ্যে আতংক দেখা দেয়। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে তারা শোরচিৎকার করলে ও এলাকাবাসী ছুটে আসে। তিনি বেড়িবাঁধের ধসে পড়া অংশ জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের দাবি জানান। অন্যতায় যদি প্রবল বর্ষণ হয় হালদা নদীর ঢলের তোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধের অংশ বিশেষ ঢলের তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেলে এলাকার অনেক বসতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা আলম জানান, বেড়িবাঁধ ধসে যাওয়ায় সেখানে লোক চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পূর্বে বেড়িবাঁধ দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারলেও বর্তমানে বেড়িবাঁধ ধসে পড়ায় আর গাড়ি চলাচল করতে পারছেনা। ফলে যেকোন সময় অগ্নিদূর্ঘটনা ঘটলে কিংবা কোন লোক অসুস্থ হয়ে পড়লে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার লোকজনকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
পানি উন্নয়নের বোর্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বেড়িবাঁধ ধসে পড়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন ঠিকাদারকে এখনো বিল পরিশোধ করা হয়নি। বিল পরিশোধের পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করে কাজ বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধ করা হবে।
তাছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণসহ নির্মাণ কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করতে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট সর্বমোট ৩ শ ৪০ কোটি বরাদ্দ চেয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে।