কীটের কাঁচামাল পৌঁছেছে গণস্বাস্থ্যে ,সরকারকে ১১ এপ্রিল হস্তান্তর করা হবে

কীটের কাঁচামাল পৌঁছেছে গণস্বাস্থ্যে ,সরকারকে ১১ এপ্রিল হস্তান্তর করা হবে

সাব্বির আহমেদ।।

নভেল করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট তৈরির প্রস্তুতি নিলেও এতদিন কাঁচামাল (রি-এজেন্ট) হাতে পায়নি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। অবশেষে রোববার সকালে করোনা শনাক্তে কিট তৈরির কাঁচামাল বুঝে পেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

খবরটি নিশ্চিত করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চায়না থেকে আসা কীট দিয়ে অন্তত ১০ হাজার সন্দেহ রোগীর করোনাভাইরাস সনাক্ত করা যাবে।

সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু লকডাউন থাকার পরও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় আমরা কাঁচামাল দ্রুত হাতে পেয়েছি। তাদেরকে বিশেষ ধন্যবাদ। সবকিছু সহজ করে দিয়েছেন তারা। কীট তৈরির কাঁচামালগুলো এখন সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।

সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ১১ এপ্রিল বেলা ১১টায় ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরকারের দায়িত্বশীলদের কাছে করোনা সনাক্তকরণের কীট বুঝে দেওয়া হবে বলে জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তবে এই চিকিৎসক জানান, তাদের কীট তৈরির জন্য করোনায় আক্রান্ত এমন ৫ জন রোগীর সামান্য রক্ত প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এই কীটের কাঁচামাল সরবরাহে সহায়তা করেছেন চায়নায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ তাদের। কারণ তারা বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছেন। কাঁচামাল আসতে বিমানবন্দরে ট্যাক্স শুল্কমুক্ত করাসহ নানা বিষয়ে সাহায্য করেছেন তারা।

এর আগে করোনাভাইরাস শনাক্তে কোভিড-১৯ রোগ পরীক্ষার সহজ ও স্বল্পমূল্যের পদ্ধতি উদ্ভাবন করে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র। পরে তারা সরকারের কাছ থেকে এ কিট তৈরির কাঁচামালের আমদানির অনুমতি পায়।

ডা. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার চিকিৎসক নিহাদ আদনান, মোহাম্মদ রাশেদ জমিরউদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। ২০০৩ সালে পৃথিবীজুড়ে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। বিজন কুমার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী।

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্লাড গ্রুপ যে পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা হয়, এটা মোটামুটি সে রকমের একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে।

বিজন কুমার ও তাঁর দলের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত সম্ভব জানিয়ে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে মাত্র ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে করোনা শনাক্ত করা যাবে। এতে খরচ পড়বে তিন শ থেকে সাড়ে তিন শ টাকা। সরকার যদি এর ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ না করে, তাহলে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র দুই থেকে আড়াই শ টাকায় এটি বাজারজাত করতে পারবে বলে দাবি করেছে।