কিংবদন্তি অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে অপমানের প্রতিবাদে শিল্পীদের মানবন্ধন

কিংবদন্তি অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে অপমানের প্রতিবাদে শিল্পীদের মানবন্ধন
কিংবদন্তি অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে অপমানের প্রতিবাদে শিল্পীদের মানবন্ধন

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

কিংবদন্তি  অভিনেতা ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে অপমান ও হামলার হুমকি দেয়ার প্রতিবাদে মাঠে নামলো চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন। সোমবার দুপুর ১২টায় এফডিসির সামনের রাস্তায় মানবন্ধন করেন তারা।

নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইন কার্যকরের পর ধর্মঘটকারী বাস-ট্রাকের শ্রমিকরা ইলিয়াস কাঞ্চনের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। শুধু তাই নয়, ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়াসহ তার ছবি অসম্মানজনকভাবে রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখতেও দেখা যায়। যেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।

পরিবহন মালিক শ্রমিকদের এমন কাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের তারকারা। তারা ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন, শাহীন সুমন, এস এ হক অলিক, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, চিত্রনায়ক ইমন, অঞ্জনা, আলেক জান্ডার বো, অরুণা বিশ্বাস।

সে সময় বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন তারা।মানববন্ধনে প্ল্যাকার্ড হাতে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্যরা। মানববন্ধনের মূল ব্যানারে লেখা ছিল, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পের সকল সংগঠনের পক্ষ থেকে চিত্রনায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রতি অসম্মানজনক আচরণের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাই। এবং জনস্বার্থে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই।

ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে শ্রমিকদের এমন আচরণের বিষয়ে মুখ খুললেন চলচ্চিত্র শিল্পীসমিতির সভাপতি ও ঢাকাই ছবির খলচরিত্রে অভিনেতা মিশা সওদাগর।

তিনি বলেন, আমাদের বড় ভাই, একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেব একইসঙ্গে একজন নায়ক, প্রযোজক ও গবেষক। দীর্ঘদিন থেকে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন করছেন তিনি। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে আসছেন। নতুন যে সড়ক আইন হয়েছে, এতে তার বিশেষ অবদান আছে।

তিনি আরো বলেন, তথাকথিত কিছু শ্রমিককে যারা ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামিয়ে নাচাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- মনে রাখবেন ইলিয়াস কাঞ্চন মানুষের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমেছেন। ইলিয়াস কাঞ্চন ব্যক্তিগত কোনো ফায়দার জন্য রাস্তায় নামেননি।

মানববন্ধনে আরও অংশ নিয়েছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, নৃত্যশিল্পী সমিতি, চিত্রগ্রাহক সমিতি, ভাই ভাই সঞ্চয় গোষ্ঠী, সহকারী পরিচালক সমিতি, মেকআপম্যান সমিতি, লেখক সমিতিসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন।

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারাকে হারান কিংবদন্তি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। আর কারো পরিবার যাতে এমন শোকে ডুবে না যায়, সেজন্য সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আন্দোলন গড়তে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। ২৬ বছর ধরে সংগঠনটি নিয়ে কাজ করছেন তিনি।