ঘূর্ণিঝড় মোখা’ মোকাবিলায় সীতাকুণ্ডে ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত , সম্পদ ছেড়ে আশ্রয়ে যেতে চাচ্ছেনা মানুষ

ঘূর্ণিঝড় মোখা’ মোকাবিলায় সীতাকুণ্ডে ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত , সম্পদ ছেড়ে আশ্রয়ে যেতে চাচ্ছেনা মানুষ
ঘূর্ণিঝড় মোখা’ মোকাবিলায় সীতাকুণ্ডে ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত , সম্পদ ছেড়ে আশ্রয়ে যেতে চাচ্ছেনা মানুষ

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় উপকূল ও পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হয়েছে ।পাশাপাশি প্রস্তুত করা হয়েছে ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র । তাছাড়া ১০টি মেডিকেল টিম ও সরকারি–বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও প্রয়োজনীয় লোকবলের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব থেকে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা মাইকিং করা হয়। একইভাবে আজ শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রস্তুত করা আশ্রয়কেন্দ্রে সরে আসতে মাইকিং এর মাধ্যমে টানা সচেতনতামূলক প্রচারণা চালান উপজেলা প্রশাসন। যদিও সিংহভাগ মানুষ জীবন ঝুঁকি জেনেও সম্পদ রেখে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে নারাজ। অথচ এই উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসন নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চালানো হচ্ছে মাইকিংসহ নানাভাবে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে প্রচারণা।

উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় পাহাড় ও উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে দুটি স্থায়ী সাইক্লোন সেন্টারসহ ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর পাশাপাশি উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন, কলেজ ভবনগুলোকে লোকজনের আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের খাবারের জন্য ১০ টন চাল ও ৪০ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসবের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিশ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট।

ইউএনও আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা দেখা দেওয়াই সেখানকার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আসতে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রোববার থেকে শুরু হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলোও স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, সীতাকুণ্ডের নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ঘূর্ণিঝড়কালে চিকিৎসাসেবার জন্য ১০টি পৃথক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি দুটি অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি বেসরকারি বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সীতাকুণ্ডের পিডিবির বাড়বকুণ্ড বিতরণ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সীতাকুণ্ডের প্রতিটি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ২০ ফুট দূরে গাছ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দমকা হাওয়ায় গাছের ডালপালা এসে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ওপর পড়তে পারে এতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাবে হয়তো । এসময় আমাদের প্রকৌশলীরা লাইন সচল করার জন্য দ্রুততার সাথে চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

সীতাকুণ্ড আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী সীতাকুণ্ডে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বাতাস না থাকলেও দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানান তিনি ।

খালেদ / পোস্টকার্ড;