ভিন্ন ধারার শিল্পী সীতাকুন্ডের এফ এইচ ইলিয়াস

ভিন্ন ধারার শিল্পী সীতাকুন্ডের এফ এইচ ইলিয়াস
ভিন্ন ধারার শিল্পী সীতাকুন্ডের এফ এইচ ইলিয়াস

নাছির উদ্দিন শিবলু, বিশেষ প্রতিবেদক, পোস্টকার্ডবিডি.কম ।।   

সীতাকুন্ড  উপজেলা কুমিরা ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নিয়ে প্রতিভাকে আকড়ে ধরে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে চলছেন ভিন্ন ধারার শিল্পী  এফ এইচ ইলিয়াস। ১৯৭২ সালে ২৪ সেপ্টেম্বর কোর্ট পাড়ার গুনী ব্যাক্তি খোরশেদ ই আলম এর ঘরে জন্ম গ্রহন করে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষে মজে উঠেন আবৃত্তি শিক্ষায়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশী আবৃত্তি শিক্ষাকে আঁলিঙ্গন করে হয়ে উঠেন ভিন্ন ধারার আবৃত্তি শিক্ষার দীক্ষা। সে থেকে সকল প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করে ২০০১ সালে চট্টগ্রামের বোধন আবৃত্তি পাঠশালায় গ্রহন করেন আবৃত্তি শিক্ষা। পরবর্তীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনের মাধ্যমে লাভ করেন আবৃত্তি শিল্পীর খ্যাতি। ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়া খ্যাতি নিয়ে ডিসি হিল, সিটি কর্পোরেশসহ একাধিক আলোচিত স্থানে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পান। অথচ ভিন্ন ধারার শিক্ষার উপর দাঁড়িয়ে আবৃত্তি চর্চা চললেও এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্দকতা তৈরী করে রেখেছে লাঞ্চনা আর বঞ্চনা। এরপরও সকল বাঁধা সত্তে আবৃত্তির বচন ভঙ্গি ও শুদ্ধ উচ্চারনে হার মানেনি কখনও। অদম্য প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় অনুষ্ঠান আবৃত্তি ও শুদ্ধ উচ্চারনে ভাষার ব্যবহার তুলে ধরে চলছেন। বাকি জীবনেটা জনকল্যান মূলক কাজ করে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়ার প্রত্যায় ব্যাক্ত করেন এই গুনী কবি ও আবৃত্তিকার।

তিনি বলেন,‘ স্বাংস্কৃতি মানসিকতায় আবৃত্তি শিল্প বেচে নিয়েছি। শুদ্ধ উচ্চারন ও আবৃত্তি চর্চা ভিন্ন ধর্মী শিল্প হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে গ্রহন করতে পারছে না সর্বসাধারন। শুদ্ধি উচ্চারনের ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষিতদেরও খেতে হয় হিমশিম। তাই কবিতা আবৃত্তি এবং শব্দের শুদ্ধ উচ্চরন চর্চায় শিক্ষিত সমাজকে এগিয়ে নিতে সব সময় রয়েছে প্রচেষ্টা। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধি উচ্চারন কর্মশালা করতে গেলে হিমশিম খেতে হয়। এরপরও শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আন্তরিকতায় উপজেলা প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবৃত্তি চর্চা সুযোগ হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন,‘ শুদ্ধ উচ্চারন ও আবৃত্তি চর্চার নিয়মবলী শিক্ষাটা প্রতিষ্ঠানে শেখানো পাঠদান হতে কিছুটা ভিন্ন হওয়ায় অনেকে এটাকে সাংঘর্ষিক মনে করে। যে কারনে সর্বক্ষেত্রে সমাদৃত না হওয়ায় মমার্থটা বুঝানো সম্ভবপর হচ্ছে না। তারপরও সমাজ ও রাষ্ট্রভাষার মায়ায় সকল তিরস্কার ও অবহেলাকে মাথায় রেখে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যে বা যারা বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে তারা আমাকে সাহস ও সহযোগীতা দেখিয়েছে। আর সেসব লোক ও সংগঠনের বদৌলতে নিজ এলাকায় সমাদৃত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। যে সব সংগঠন ও সংগঠক শ্রদ্ধা দেখিয়ে এগিয়ে এসেছে তারমধ্যে অন্যতম ক্ষুধিরাম পাঠাগার ও সীতাকুন্ড সাহিত্য ও স্বাংস্কৃতি পরিষদ। এছাড়া গল্পকার দেবাশীষ ভট্টচার্য, নারী নেতৃ ও স্বাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব সুরাইয়া বাকের, কবি ও সাংবাদিক জামশেদ উদ্দিন, নাছির উদ্দিন শিবলুদের মত অনেকের সহযোগীতায় প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু সব সময় অবহেলা আর বঞ্চনা পেয়েছি পরিবার ও নিজ এলাকার লোকজনের কাছে। যদি সহযোগীদের নেয় পরিবারসহ পাড়া প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসত তাহলে সমানে এগিয়ে যাওয়ার পথটা আরো সুগম হত। পরিস্থিতি এতো নজুক হয়ে উঠেছে যে সহযোগীতার পরিবর্তে বখাটে ছেলেদের দ্বারা লাঞ্চিত হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এভাবে কবি ও আবৃত্তিকার নানা চড়ায়-উতরায়ে সমাজ সংস্কাওে গুরুত্বপূর্ন ভ’মিকা রেখে চলছেন। এই এগিয়ে চলার পরও শিক্ষক ও সুধী সমাজের নিকট সাধুবাদের কমতি ছিল না কখনও। তাইতো লেখা পড়ার সাথে সম্পর্কিত বিষয়টা শিক্ষার মান উন্নয়নে ভ’মিকা রাখছে বলে মনে করেন সুধি ও শিক্ষক সমাজর লোকজন।

ভিন্নধর্মী শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে শিক্ষক নাছির উদ্দিনের অভিব্যাক্ত হল,‘ শুদ্ধ উচ্চারন ও কবিতা আবৃত্তির শিক্ষাটা একাডেমিক শিক্ষা হতে একটু আলাদা। এ শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা উচ্চারন ও আবৃত্তিতে পারদর্শিতা পাওয়ায় আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মশালাটা অব্যহত রাখা হয়েছে। এ শিক্ষাকে সাংঘর্ষিক মনে না করে শিক্ষার্থীদের পারদর্শি করে তুলতে সবাই সহযোগীতা করার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।