রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতর্কিত মহিবুল্লাহর নেতৃত্বে ফের মিটিং,উখিয়া থানার অস্বীকার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতর্কিত মহিবুল্লাহর নেতৃত্বে ফের মিটিং,উখিয়া থানার অস্বীকার

রফিকুল ইসলাম, উখিয়া ।।

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ দীর্ঘ চার মাস পর আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এবার তার সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস বা এআরএসপিএইচ- এর ব্যানারে পালন করেছেন ‘রোহিঙ্গা ন্যাশনাল ডে’ বা ‘রোহিঙ্গা জাতীয় দিবসের কথিত ৬৬ বছর পূর্তি’। এ নিয়ে অন্যান্য রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে এ ধরনের কোনো মিটিং হয়নি বলে জানিয়েছে উখিয়া থানা পুলিশ।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রোহিঙ্গাদের কথিত ‘রোহিঙ্গা ন্যাশনাল ডে’ উদযাপন করে বির্তকিত রোহিঙ্গা সংগঠন এআরএসপিএইচ। উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্প – ১ ওয়েস্টের সরকারি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ের কাছাকাছি লম্বাশিয়া চৌরাস্তার একটি মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসায় তাদের এ দিবসটি পালন করা হয়।

উক্ত মাদ্রাসায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা মহিবুল্লাহ, আয়োজক মাস্টার আবদুর রহিম ও ডাঃ মোঃ যুবায়েরসহ এআরএসপিএইচ এর নেতারা দিবসটি উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, ১৯৫৪ সালের ৩ জানুয়ারি বার্মার জাতীয় সংসদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইউ নু রোহিঙ্গা স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। ১৯৬২ সালে সাবেক জেনারেল নে ইউন ক্ষমতা দখলের পর থেকে দিবসটি বার্মায় আর পালন করতে দেয় হয়নি।

এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোন পূর্বানুমতি রয়েছে কিনা জানার জন্য চেষ্টা করেও মহিবুল্লাহকে পাওয়া যায়নি।

রোহিঙ্গা রিফুউজি কাউন্সিলের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, মহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের কিছু উচ্ছৃংখল লোকজনদের নিয়ে বারবার এ ধরনের কোনো না কোনো বির্তকিত কর্মকাণ্ড করে থাকে। তার এ ধরণের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের ক্যাম্পে আশ্রিত লক্ষ লক্ষ সাধারণ রোহিঙ্গাকে নানাভাবে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে।

কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারি মোঃ নুর, রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট ডাঃ জাফর সহ রোহিঙ্গারা এআরএসপিএইচ ও উগ্রপন্থী রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর বাংলাদেশের আইন কানুন বিরোধী তৎপরতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, মিয়ানমারে কোনো সময় এ ধরণের দিবস পালনের কোন নজির নেই। এ দিবস সম্পর্কে রোহিঙ্গারা কিছুই জানে না।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট মহিবুল্লাহ তার সংগঠন এআরএসপিএইচ- এর ব্যানারে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার দুই বছর পূর্তি পালন করে। এ উপলক্ষ্যে কয়েক লক্ষ লোকের আয়োজিত সমাবেশে মহিবুল্লাহ সহ রোহিঙ্গা নেতারা বির্তকিত বক্তব্য দেন।

এছাড়াও সরকারের অনুমোদনবিহীন সমাবেশ করা, সমাবেশের অর্থ যোগান নিয়ে বেশ কিছু দেশী-বিদেশী এনজিওর কর্মকাণ্ডে নানা বির্তকের সৃষ্টি হয়েছিল। ওই সময়ের পর থেকে মহিবুল্লাহ ও তার অনুসারী রোহিঙ্গা নেতারা চুপ মেরে গা ঢাকা দিয়ে থাকত। দীর্ঘদিন পর আবারও বির্তকিত অনুমোদনবিহীন সমাবেশ করল সেই রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ।

এ ব্যাপারে কুতুপালং -১ ওয়েস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপ সচিব মোঃ আতিকুল ইসলামের সরকারি মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল মনসুর এ ধরনের কোনো মিটিং মহিবুল্লাহ কোনো ক্যাম্পে করেনি বলে জানান। তবে সভায় উপস্থিত মাস্টার নউকিম মিটিংয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।