শীতকালে ওজু ও নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ সুসংবাদ ও পুরস্কার

শীতকালে ওজু ও নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ সুসংবাদ ও পুরস্কার
শীতকালে ওজু ও নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ সুসংবাদ ও পুরস্কার

মাওলানা মাহাথির মোবারক ।। 

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে দুটি ঋতুর কথা উল্লেখ করেছেন। একটি হলো শীত আর অপরটি গ্রীষ্ম। গ্রীষ্মকালে মানুষ ইবাদত-বন্দেগি স্বাভাবিকভাবে করলেও শীতকালে কিছুটা অলসতাবোধ করে। কেউ কেউ আবার শীতের তীব্রতার কারণে মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ কাজাও করে ফেলে। কিন্তু শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডায় সকাল-সন্ধ্যায় ওজু ও নামাজ আদায়ে বিশেষ সওয়াবের কথা উঠে এসেছে প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের বর্ণনায়।

প্রচন্ড ঠান্ডায় ওজু ও নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ সুসংবাদ ও পুরস্কার ঘোষণা করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। শীতের সময় প্রচন্ড ঠান্ডায় যাতে কেউ ওজু করতে অবহেলা না করে, সে কারণে ওজু ও নামাজের প্রতি যতœবান হতে এবং বড় পুরস্কার ও ফজিলতের কথা এভাবে ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবী রাসুলুল্লাহ (সা.) শীতের ভোরে ফজরের নামাজ। কিন্তু শয়তান তখন মানুষকে আরেকটু ঘুমাতে প্রলোভন দেখায়। তাদের শরীরে অলসতা সৃষ্টি করে দেয়। প্রকৃত মুমিন শয়তানের কুমন্ত্রণায় ধোঁকা খায় না। ঠান্ডা-শীতল পানিতে ওজু করে। শীতার্দ্র প্রবাহে মসজিদের দিকে পা চালায়। মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দেয়। এমন মুমিন বান্দার জন্যই এসেছে ক্ষমার ঘোষণা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের সংবাদ দেব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহগুলো মুছে দেবেন (তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন) এবং (আল্লাহর নিকট) তোমাদের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করবেন? সাহাবায়ে-কেরাম বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল! নবী (সা.) তখন বলেন, (শীত বা অন্য কোনো) কষ্টকর মুহূর্তে ভালোভাবে ওজু করা।’ (মুসলিম : ২৫১)।

শয়তান মানুষকে শীতকালে এশা ও ভোরে ফজরের নামাজ থেকে দূরে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। শীতের কষ্টকর মুহূর্তগুলো চোখে ভাসিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রকৃত মুমিন কখনও হারে না। ধোঁকায় পড়ে না। অলসতা না করে দ্রæত ওজু করে মসজিদে ছুটে যায়। শীতের ভোরে ফজরের নামাজ আদায় খুবই কষ্টসাধ্য ইবাদত। আর যে ইবাদতে কষ্ট যত বেশি, সে ইবাদতে সওয়াবও তত বেশি। স্বাভাবিকভাবে এশা ও ফজরের নামাজের ফজিলত ও সওয়াব এমনিতেই অন্য নামাজের চেয়ে বেশি।
কিন্তু শীতকালে এশা ও ফজরের নামাজের সওয়াব-মর্যাদা বেড়ে যায় শতগুণ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই ঠান্ডার সময়ের নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি : ৫৭৪)। তাই আল্লাহ তায়ালার প্রকৃত মুমিন বান্দারা কখনও শীতকালের ঠান্ডাকে ভয় পাবে না। তারা আল্লাহর জাহান্নামের শাস্তিকেই বেশি ভয় পাবে ও প্রাধান্য দেবে।

এ কারণেই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘোষণা অনুযায়ী জান্নাত প্রাপ্তি ও গুনাহ থেকে মুক্তি লাভে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তকাল হিসেবে বিবেচনা করে মুমিনরা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই শীতকালে খুব বেশি থেকে বেশি ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।