সোলসের সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো উন্মোচন , দর্শকদের কাছ থেকে নতুন গান আহবান

সোলসের সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো উন্মোচন , দর্শকদের কাছ থেকে নতুন গান আহবান
সোলসের সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো উন্মোচন , দর্শকদের কাছ থেকে নতুন গান আহবান

বিনোদন ডেস্ক ।।  

দেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডদল সোলস। পথচলার ৫০ বছর পেরিয়েছে । দীর্ঘ এই পথচলায় গানের এই দলটি সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর একটি ক্লাবে দলটির বর্তমান সদস্যদের সঙ্গে সাবেক সদস্য, গীতিকার ও সংশ্লিষ্ট অনেকেই হাজির হয়েছিলেন। ৫০ বছর পূর্তির আয়োজনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দলটির সদস্য নাসিম আলী খান। এ সময় তিনটি লোগো উন্মোচন করা হয়। এই তিনটি লোগো দর্শকের ভোটে ক্রমান্বয়ে ৫০ বছর পূর্তিতে ব্যবহার হবে। এরই মধ্যে লোগো তিনটি ভোটিংয়ের জন্য সোলসের অফিসিয়াল ও পার্থ বড়ুয়ার ফেসবুক পেজে দেওয়া হয়েছে। 

তিনটি লোগো উন্মোচন করেছেন আহমেদ নেওয়াজ, র‍্যালি পিনেরো ও পিলু খান। তিনটি লোগোতেই ব্যবহার করা হয়েছে শক্তির প্রতীক আগুন আর সমুদ্র ও আকাশের প্রতীক নীল রং। লোগোগুলো ডিজাইন করেছেন সোলসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমেদ নেওয়াজ। এর আগে আইয়ুব বাচ্চু, রনি বড়ুয়াসহ এই ব্যান্ডের সঙ্গে জড়িত যারা আজ বেঁচে নেই সবার স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে সোলসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমেদ নেওয়াজ শুরুতে কবিতা আবৃত্তি দিয়ে বক্তব্যে শুরু করেন। এরপর তিনি বলেন, ‘কবিতার মতো আমাদের জীবনে অনেক কিছুই হয় না। তবে সোলসের ৫০ বছর হয়ে গেছে। হয় না হয় না করেও লেগে থাকতে পারলে অনেক কিছু হয়। আমি পার্থ বড়ুয়াকে ধন্যবাদ দেই সে ব্যান্ডটাকে ধরে রেখেছে এবং জনপ্রিয় করে রেখেছে।’ এরপর সোলসের বর্তমান কাণ্ডারী পার্থ বড়ুয়া র‍্যালি পিনেরোকে পরিচয় করিয়ে দেন তার স্কুল শিক্ষক হিসেবে। সোলসের সঙ্গে তিনিও দীর্ঘদিন জড়িয়ে আছেন। র‍্যালি পিনেরো বলেন, “সোলস গানপ্রিয় আত্মাগুলোকে এক করে ৫০ বছর পার করেছে। এ যাত্রা ভীষণ দামি ও দুর্দান্ত। যতই সময় বয়ে যাক, ভাঙা গড়া আসুক, ‘সোলস নেভার ডাইজ’।” এরপর সোলসের প্রাক্তন সদস্য বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের সুরকার পিলু খান সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। 

সোলসের অন্যতম সদস্য পার্থ বড়ুয়া বলেন,‌‌ ৫০ বছর পূর্তিতে পিলু খানের সঙ্গে দুটি গান করতে যাচ্ছে সোলস। শিগগিরই এ দুটি গানের রেকর্ডিং শুরু হবে। সোলস ভেঙে যে রেনেসাঁ ব্যান্ড তৈরি হয়েছিল তাদের সঙ্গেও গান করা হবে। সোলসের আয়োজনে গাইবেন রেনেসাঁর নকীব খান। 

সোলসকে সুবর্ণজয়ন্তীতে আশির্বাদ জানাতে এসেছিলেন নন্দিত গীতিকার শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। তিনি সোলসের জন্য ‘হৃদয় কাদামাটির কোনো মূর্তি নয়’,‘সময় যেন কাটে না’,‘চায়ের কাপে পরিচয়’সহ অনেক গান লিখেছেন। তিনি বলেন, 'সোলস একটা মাইলস্টোন। অনেক কারণেই সোলস সবার থেকে আলাদা। সাধারণত আমরা দেখি কোনো একটা ব্যান্ড থেকে কেউ বেরিয়ে এলে  সেই ব্যান্ডগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। সোলস ব্যতিক্রম, ভাঙেনি। জনপ্রিয়তা ধরে রেখে আজও টিকে আছে। সোলস এভাবেই থেকে যাবে অনন্তকাল। 

সুবর্ণজয়ন্তীতে সোলস দর্শক ও শ্রোতাদের কাছ থেকে নতুন গান আহবান করেছে। পার্থ বড়ুয়া জানান, শ্রোতাদের পাঠানো গানগুলো থেকে সেরা ১০টি গান বাছাই করা হবে। পরবর্তীতে গানগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশ হবে। গান পাঠাতে হবে SOULSFIFTY@GMAIL.COM - এই ইমেইল ঠিকানায়৷ গান পাঠানোর শেষ সময় চলতি বছরের ১৫ জুলাই।

এদিকে জানা গেছে, সোলসের ৫০ বছর পূর্তির আয়োজনে, ৫০টি গান প্রকাশ করা হবে। জুলাই মাসে ইংল্যান্ডে ও সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় কনসার্ট রয়েছে। এ ছাড়া দেশ-বিদেশে আরও কয়েকটি কনসার্টের পরিকল্পনা আছে। ইতিমধ্যে ১০টি গান প্রকাশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সোলসের বর্তমান লাইন আপ- নাসিম আলী খান (কণ্ঠ), পার্থ বড়ুয়া (কণ্ঠ ও লিড গিটার), আহসানুর রহমান আশিক (ড্রামস), মীর শাহরিয়ার মাসুম (কিবোর্ড), মারুফ হাসান রিয়েল (বেজ গিটার)।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই গানের জগতে পথচলা শুরু সোলস ব্যান্ডের। ১৯৭২ সালে সাজেদ উল আলমের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের কয়েক তরুণ ‘সুরেলা’ নামের একটি ব্যান্ড গঠন করে। ১৯৭৩ সালে সেই ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘সোলস’। সমুদ্রঘেরা চট্টগ্রামের গন্ডি পেরিয়ে দলটি হয়ে উঠে সারা দেশের। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় সোলসের প্রথম অ্যালবাম ‘সুপার সোলস’। সাজেদ, লুলু, আহমেদ নেওয়াজ ও রনি বড়ুয়া ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এরপর  ধারাবাহিকভাবে সোলস-এ যোগ দেন নকীব খান, পিলু খান, তপন চৌধুরী, নাসিম আলী খান, আইয়ুব বাচ্চু,পার্থ বড়ুয়াসহ অনেকে।

খালেদ / পোস্টকার্ড;