১ হাজার পিপিই পেলো বান্দরবানের চিকিৎসকরা , কোয়ারেন্টাইনে ১৬০ জন, ছাড়া পেলো ৬৪

১ হাজার পিপিই পেলো বান্দরবানের চিকিৎসকরা , কোয়ারেন্টাইনে ১৬০ জন, ছাড়া পেলো ৬৪

বান্দরবান প্রতিনিধি।।

এখনো করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি বান্দরবানে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বান্দরবানে চিকিৎসকরা ইতিমধ্যে পেয়েছে এক হাজার ৪০টি পিপিই। জেলায় কোয়ারেন্টাইন রোগীর সংখ্যা হচ্ছে ১৬০ জন। ইতিমধ্যে ১৪ দিনের সময়সীমা পূর্ন করে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেলো ৬৪ জন।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুপ্রু মারমা বলেন, জেলায় কোনো করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি। আইসোলেশনেও এখনো পর্যন্ত কাউকে রাখা হয়নি। বিদেশ ফেরত এবং জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটিতে বান্দরবান নিজের বাড়িতে ফিরে আসা লোকজনদের হাসপাতাল এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।

তবে এ সংখ্যাটা কমে আসছে। করোনা মোকাবেলায় চিকিৎসকদের জন্য এক হাজার ৪০টি পিপিই পাওয়া গেছে। তারমধ্যে সাতটি উপজেলায় জনসংখ্যা অনুপাতে ৮০ এবং একশটি করে পিপিই বন্টন করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে। তবে পরীক্ষার সরঞ্জাম নেই এখানে।

আলীকদম উপজেলার সন্দেহ একজনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষায় তার করোনা সনাক্ত হয়নি।

অপরদিকে করোনা মোকাবেলায় বান্দরবান জেলার জন্য ২শ মেট্টিকটন খাদ্যশস্য এবং ৫০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪৭ মেট্টিকটন চাল এবং ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেনাবাহিনীর নিজস্ব তহবিল থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে চলেছে।

পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং পৌরসভার পক্ষ থেকেও প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, তেল, ডাল, লবণ, সাবান সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। অপরদিকে দমকল বাহিনী এবং সেনাাহিনীর গাড়িতে করে জীবাণুুনাশক তরল ছিটানো হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডিক্লিন এবং রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগেও ছিটানো হচ্ছে তরল জীবাণুনাশক।

সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রায় ৩ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এদিকে শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে করোনা স্বেচ্ছাসেবক বান্দরবান, দুমুঠো অন্নের যোগাড়, বান্দরবান পরিবার, সিটিজেন ওয়েলফেয়ার, বীর বাহাদুর ফাউন্ডেশন নামে বেশকয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

এছাড়াও সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগেও খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। মহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন পুলিশ। জনস্বার্থে ডোর টু ডোর সার্ভিস চালু করেছে পুলিশ প্রশাসন। প্রশাসন, পুলিশ, পৌরসভা এবং সেনাবাহিনীর উদ্যোগে সচেতনামূলক মাইকিং করা হচ্ছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনসমাগম ঠেকাতে জনসচেতনতামূলক নানামুখী কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। হাট-বাজার গুলোতে পানির উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডোর টু ডোর সেবা কার্যক্রম চালু করেছে পুলিশ প্রশাসন।

আমাাদের জানালে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দ্রুত মানুষের ঘরে পৌঁছে দেয়া হবে। ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন, অন্যকে নিরাপদে রাখুন সরকারের এ স্লোগান নিয়ে কাজ করছে পুলিশ।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, সংকট মোকাবেলায় সরকারের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্যশষ্য মওজুদ রয়েছে। খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই জেলায়ও। সরকারের নির্দেশনা মেনে প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করা হচ্ছে। জেলার হাট-বাজার গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কম সংখ্যক দোকান খোলা রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত লকডাউন থাকবে জেলা।