চট্টগ্রামে গ্যাস লাইন ও রাইজার পরীক্ষার উদ্যোগ,আজ মন্ত্রীর বৈঠক

চট্টগ্রামে গ্যাস লাইন ও রাইজার পরীক্ষার উদ্যোগ,আজ মন্ত্রীর বৈঠক

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

চট্টগ্রামের গ্যাস রাইজার এবং শহরের অলিগলিতে বিস্তৃত কয়েক হাজার কিলোমিটার গ্যাস লাইন পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি কোম্পানির সাথে গ্যাস লাইনের লিকেজ পরীক্ষার চুক্তি করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সফলতার ওপর এই কার্যক্রম দেশের অন্যান্য গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোও শুরু করবে।

নারায়ণগঞ্জের মসজিদে এসি বিস্ফোরণের সাথে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের পর পুরো দেশের গ্যাস লাইন এবং রাইজার পরীক্ষার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আজ সোমবার সকালে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী ছয়টি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাথে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন।

পেট্রোবাংলার পদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, দেশে গ্যাস ব্যবহার শুরু হয়েছে চল্লিশ বছর আগে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই সময় স্থাপন করা লাইন এবং রাইজার রয়েছে। দীর্ঘদিনের ব্যবহারে বহু লাইনে মরিচা এসেছে, লিকেজ এসেছে। পুরাতন রাইজারের রেগুলেটর এবং ভাল্ব নষ্ট হয়েছে। কিন্তু একটি করে রাইজার পরীক্ষা করা, লিকেজ উদ্ধার এবং মেরামত করা কঠিন ব্যাপার। আবার লাইনের লিকেজ চিহ্নিত করাও কঠিন। এই কঠিন কাজটি সহজে করার জন্য পেট্রোবাংলা একটি পাইলট প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে। শুরুতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে (কেজিডিসিএল) এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হচ্ছে। মোবাইল গ্যাস লিকেজ ডিটেকটর নামের একটি মেশিনের সাহায্যে শহরের অলিগলিতে স্থাপিত গ্যাস লাইনের লিকেজ অনুসন্ধানের কাজে হাত দেয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক জিকম নামে একটি কোম্পানির সাথে ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, জিকম কোম্পানি বিশেষায়িত গাড়িতে স্থাপিত একটি মেশিন দিয়ে চট্টগ্রাম শহরের সব লাইনের লিকেজ অনুসন্ধান করবে। একই সাথে রাইজার পরীক্ষাও সম্পন্ন করা হবে। বিশেষায়িত গাড়িটি একটি রাস্তা দিয়ে চলার সময় দুই পাশের অন্তত ৬০ ফুটের মধ্যে গ্যাসের লাইনের যত লিকেজ আছে সব চিহ্নিত করবে। সবগুলো লিকেজের তথ্য মেশিনের মনিটরে ধরা পড়বে। এই লিকেজ সাথে সাথে মেরামতেরও ব্যবস্থা করা হবে। জিকম সপ্তাহে ছয়দিন এই গাড়ি দিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস লাইন পরীক্ষা করবে। দৈনিক অন্তত ২৫ কিলোমিটার পথ গাড়িটি অতিক্রম করবে।

আশির দশকের শুরুতে স্থাপন করা শহরের পুরাতন অংশের লাইনগুলো আগে পরীক্ষা করা হবে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই কাজটির মাধ্যমে শহরের সব গ্যাস লাইনের লিকেজ চিহ্নিত এবং মেরামত করা সম্ভব হবে। চট্টগ্রামের সফলতার পর একই ধরনের প্রকল্প দেশের অন্যান্য এলাকায়ও বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চুক্তি করেছি। ওই কোম্পানি কাজ শুরু করবে। পাইলট প্রকল্প হলেও এর মাধ্যমে গ্যাসের লিকেজ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ তৈরি হবে।

তিনি বলেন, পাথরঘাটার দুর্ঘটনার পর কেজিডিসিএল নগরীর ১ লাখ ৪৫ হাজার রাইজার পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিল। মার্চ মাস পর্যন্ত বেশ কিছু রাইজার পরীক্ষা করা হয়েছিল। চিহ্নিত করা হয়েছিল কিছু অবৈধ লাইনও। কিন্তু করোনার কারণে এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নারায়ণগঞ্জের মসজিদের ঘটনার সাথে তিতাস গ্যাসের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামেও বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হচ্ছে। পাইলট প্রকল্প শুরু হওয়ার আগে ম্যানুয়েলি রাইজার পরীক্ষা করার কার্যক্রম আবার শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে গঠিত ছয়টি টিম নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে কার্যক্রম চালাবে। একই সাথে গ্যাস লাইনের লিকেজসহ সার্বিক বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করার দিকনির্দেশনা দিতে ছয়টি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাথে আজ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠেয় বৈঠক থেকে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খায়ের আহমদ মজুমদার বলেন, সকাল সাড়ে ১১টায় মন্ত্রীর সাথে জুম মিটিং হবে।

সুত্র. আজাদী