বিশুদ্ধ পানির সংকট ফটিকছড়ির পাহাড়ি এলাকায়, পাহাড়িরা নানান রোগে আক্রান্ত

বিশুদ্ধ পানির সংকট ফটিকছড়ির পাহাড়ি এলাকায়, পাহাড়িরা নানান রোগে আক্রান্ত

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি।।

বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগছে ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকার মানুষ । শুস্ক মৌসুমে দেখা দেয় এর প্রভাব আরো বেশি। পাহাড়ি অঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়া। সেখানেও পানি প্রবাহ কম। নানা কারনে দূষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত বয়ে যাওয়া ছড়ার পানি। পাহাড়ের বসবাসকারীরা বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে এসব ছড়ার দূষিত পানি পান করার জন্য সংগ্রহ, গোসল করা, কাপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছেন। ফলে প্রতিবছর নানান রোগের আক্রান্ত হয় পাহাড়িরা।

জানা যায়, উপজেলাধীন পাহাড়ের মাঝে জনবসতি ঘটে উঠে সে অনেক দিন আগে থেকে। ঘটে ওঠা এসব দারিদ্র্য আর দুর্গম পাহাড়ের সাথে লড়াই করেই বাঁচতে শিখে এখানকার মানুষ। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায়, জীবনমানের অনেক দিক থেকেই পিছিয়ে পাহাড়ী জনপদের অধিবাসীরা। সুপেয় পানির অভাব, ল্যাট্রিন সুবিধা না থাকা, বাসস্থলে থাকার অনিশ্চয়তা, শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ না থাকা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ইত্যাদির মধ্যে তাদের বসবাস। পাহাড়ে পানির উৎসস্থলগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নদী ও ঝর্ণার ঘোলা পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে পাহাড়িরা। আর এসব পানি পান করে অধিকাংশ পাড়ায় দেখা দেয় ডায়ারিয়াসহ নানা ধরনের রোগ।

উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ পাহাড়ী পথ পাড়ি দিয়ে দুর্গমাঞ্চলগুলোতে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে এসব পাহাড়ি বাসিন্দাদের। কিন্তু একশ্রেণির বনদুস্যরা প্রকৃতি নষ্ট করে নির্বিচারে বনাঞ্চল উজাড় এবং বালু উত্তোলনের কারণে এখানকার পানির উৎস স্থলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। গোসল করা, কাপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করার জন্য পানি পাচ্ছেননা পাহাড়ের বসবাসরত মানুষজন। ফলে বয়ে যাওয়া ছড়ার ঘোলা পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া এসব অঞ্চলের সর্বত্রই চলছে পানির জন্য হাহাকার। অনেকে পানির অভাবে ঠিকমত গোসল করতে পারছেন না। পানি না থাকায় সেনিটেশন কাজেও মারাত্মত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অনেকে।

উত্তর ফটিকছড়ির কয়েকজন পাহাড়ী মারমা বলেন, দুর দুরান্ত থেকে কষ্ট করে খাবার পানি সংগ্রহ করা গেলেও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পাহাড়ি এলাকায় পুকুর বা ডোবা নেই। এখানে পাহাড়ি ছড়ায় হলো একমাত্র ভরসা। মানুষ যাবতীয় কাজে পাহাড়ি ছড়ার পানি ব্যবহার করে আসছেন। তবে শুস্ক মৌসুমে পানির কষ্ট ভোগ করতে হয়। অনেক স্কুলের টিউবওয়েলেও পানি উঠছে না বলে তারা জানান। পাহাড়ি এলাকার নানা সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এখানাকার মানুষের কষ্ট কমবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন সচেতন পাহাড়িরা।