বাজারে শীতের পোশাক কেনার ধুম

বাজারে শীতের পোশাক কেনার ধুম
বাজারে শীতের পোশাক কেনার ধুম

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

শীতের তীব্রতা বেড়েছে পৌষের শুরুতেই  । গত তিন দিন ধরে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। তাই নগরীর বিভিন্ন নামী-দামী শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাতও ছেয়ে গেছে বাহারি শীতকালীন পোশাকে। শীতের পোশাক কেনার ধুম পড়েছে শপিংমল ও ফুটপাতগুলোতে। গতকাল নগরীর জহুর মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শীতের পোশাক নিয়ে সেজেছে সম্পূর্ণ মার্কেট। ভেতরের পাশাপাশি বাইরেও বসেছে ভাসমান হকাররা।

শীতের পোশাক কেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই। শপিংমলগুলোতে কেনাকাটার সরগরম দেখে মনে হয় যেন ঈদের বাজার। এ সময় অলিগলি ও ফুটপাতে নতুন, অর্ধ-নতুন ও পুরাতন শীতের পোশাকের দেখা মেলে। এ পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে সাধারণের সাধ্যের মধ্যে। জহুর মার্কেট, টেরীবাজার, চকবাজার, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ এলাকার মার্কেটগুলো নিম্ন ও মধ্যবিত্তের শীতের পোশাকের চাহিদা মেটাতে সেজে উঠেছে। ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে ভেতরে-বাইরে রংবেরঙের বাতি দিয়ে সাজিয়েছে প্রায় সব দোকান। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের বাহারি ডিজাইনের সুয়েটার, জ্যাকেট, গেঞ্জি, ব্লেজার, মাথার ক্যাপ, হাতের মোজা পাওয়া যাচ্ছে দোকানগুলোতে। আছে মেয়েদের আধুনিক শীতকালীন পোশাকের সমাহারও। প্রতিবছরই শপিংমলগুলোতে মেয়েদের জন্য কিছু আধুনিক শীতকালীন পোশাক আসে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। মার্কেটগুলোতে এসেছে নানা ডিজাইনের শীতকালীন পোশাক। উলের মধ্যে লং সুয়েটার, কোশিকাঁটার লং, সর্ট ও ব্যাল্টযুক্ত সুয়েটার, কোশিকাঁটার পঞ্চ কুটি ও ডিজাইনেবল ব্লেজার। তবে এবার কোশিকাঁটার সর্ট সাথে ব্যাল্টযুক্ত সুয়েটারগুলো বেশি চলছে বলে জানায় দোকানিরা। মেয়েদের এ শীতকালীন পোশাক ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জহুর মার্কেট থেকে সুয়েটার কিনছে রাব্বি, হাসান ও রাশেদা বেগম। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেউ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছে, কেউবা আবার শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন। খুব শীত পড়ছে তাই পরিবারের সদস্যদের জন্য তিনটি সুয়েটার ও দুইটি মাথার ক্যাপ কিনেছেন রাব্বি। এবারের নতুন ডিজাইনের মধ্যে কোশিকাঁটার দুইটা সুয়েটার কিনেছেন রাশেদা বেগম। একটি লম্বা আর একটি সর্ট। একটি নিজের অন্যটি বোনের জন্য। তিনি বলেন, এখানে অল্প টাকায় ভালো ভালো সুয়েটার পাওয়া যায়। যেগুলো অন্যান্য মার্কেটে বেশি দামে বিক্রি করে। এখানে ২শ’ টাকা থেকে হাজারের মধ্যে খুব ভালো শীতকালীন পোশাক পাওয়া যায়।

ছেলেদের জন্যও আছে নানারকম শীতকালীন পোশাক। তবে ছেলেদের জন্য নতুন কোনো ডিজাইন আসেনি বলে জানালেন দোকানিরা। অন্যান্য বছরের মত জিন্সের জ্যাকেট, মোটা উলের গেঞ্জি, ব্লেজার ও কোর্ট আছে। এগুলোর মধ্যেই করা হয়েছে ডিজাইন। এ পোশাকগুলো ২শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দামেরও আছে।

জহুর মার্কেটের আলিঙ্গন ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শীতের এ দুই মাস শুধু শীতকালীন পোশাকই বিক্রি করি। মূলত শীতকাল ও ঈদ উৎসব ব্যবসায়ীদের বড় মৌসুম। এসময় বেচাকেনা ভালো হয়। আবার এখান থেকে দোকানিরা পাইকারি দামে শহরের বিভিন্ন মার্কেটে নিয়ে বিক্রি করে। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত এখানে ব্যবসা করছি। সব বয়সের মানুষের পোশাক আছে।

চকবাজারের মতি টাওয়ারে শীতের পোশাক কিনছে তাহমিনা তাবাচ্ছুম। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে বাচ্চাদের জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন। খুব শীত পড়ছে, আর বাচ্চাদের শীতের পোশাকগুলো ছোট হয়ে গেছে। তবে এখানে পোশাকের দাম একটু বেশি। কিন্তু যেভাবে শীত পড়ছে তাই কিনতেই হবে। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তাই কম-বেশি সবাই শীতের পোশাক কেনায় ব্যস্ত।