সীতাকুণ্ডে 'আর্সেনিক আয়রন রিমোভ্যাল প্ল্যান্ট' মন্দির বরাদ্দ পেলেও স্থাপিত হলো বোনের বাড়ির ছাদে !

সীতাকুণ্ডে 'আর্সেনিক আয়রন রিমোভ্যাল প্ল্যান্ট' মন্দির বরাদ্দ পেলেও স্থাপিত হলো বোনের বাড়ির ছাদে !
সীতাকুণ্ডে 'আর্সেনিক আয়রন রিমোভ্যাল প্ল্যান্ট' মন্দির বরাদ্দ পেলেও স্থাপিত হলো বোনের বাড়ির ছাদে !

বিশেষ প্রতিবেদক ।। 

মন্দিরের নামে সরকারি আর্সেনিক আয়রন রিমোভ্যাল প্ল্যান্ট বরাদ্দ দেখিয়ে তা নিজের বোনের বাড়ির ছাদে বসিয়েছে সীতাকুন্ড উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মচারী।

ঘটনাটি এলাকার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী।

জানা যায়, সরকার ২০২০ সালে সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বেশ কিছু আর্সেনিক আয়রন রিমোভ্যাল প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ৫ বছর মেয়াদী সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ অনুযায়ী আর্সেনিক অধ্যুষিত এলাকার মসজিদ, মন্দির ও স্কুল-কলেজে এগুলো প্রয়োজন অনুসারে স্থাপনের কথা।

এ লক্ষ্যে সীতাকুণ্ড উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের কার্যালয়ে ৪০টি প্লান্ট আসে। কিন্তু এগুলো প্রয়োজনীয় এলাকায় স্থাপন না করে অনেক ক্ষেত্রে তা ব্যক্তি স্বার্থে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এরকমই একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের একজন মেকানিক সুরঞ্জিত কর্মকারের বিরুদ্ধে। তিনি ভাটিয়ারী এলাকার পূর্বদিকে অবস্থিত মিত্র বাড়ি মন্দিরের নামে এরকম একটি প্রকল্প স্থানীয় সাংসদের কাছে তদবির করে পাশ করানোর পর তা সেখানে না বসিয়ে গোপনে মন্দির থেকে আরো দূরে নিজের বোনের বাড়ির ছাদে স্থাপন করেন। প্রথম দিকে মন্দিরের নামে এরকম প্ল্যান্ট অনুমোদন হবার কথা কেউ না জানলেও সময়ের সাথে এ ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। 

এদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে গিয়ে জানা যায় সম্প্রতি অভিযুক্ত কর্মচারী সুরঞ্জিত পার্শ্ববর্তী উপজেলা মিরসরাইয়ে বদলি হয়েছেন। মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে তিনি জানান, মন্দিরে স্থাপনের উদ্দেশ্যে এই প্ল্যান্টটি বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু পরে দেখা যায় মন্দিরে এটি বসানোর অবস্থা নেই। সূর্যালোক না থাকলে সোলার সিস্টেম কাজ করবে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে এটি আমার বোনের বাড়ির ছাদের উপরে স্থাপন করেছি। এখানে থাকলেও আশপাশের সবাই এই পানি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া মন্দিরেও জরুরি প্রয়োজনে পানি ব্যবহারের জন্য লাইন করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, আমি এ ঘটনা জানতাম না। কোন কর্মচারী যদি এমন অনিয়ম করে থাকেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থাপিত ঐ প্লান্ট খুলে ফেলা হবে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সাংসদ আলহাজ দিদারুল আলম বলেন, আমি মন্দিরের নামে প্লান্টটি বরাদ্দ দিয়েছি। কারো বাড়িতে স্থাপন করা হবে কেন? বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দেন তিনি।