সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ পার্কিং,দূর্ঘটনার আশঙ্কা

সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ পার্কিং,দূর্ঘটনার আশঙ্কা
সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ পার্কিং,দূর্ঘটনার আশঙ্কা

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার সীতাকুণ্ড উপজেলা। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই অংশে নিয়মিত হচ্ছে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং।মহাসড়কের যেকোন অংশে হুটহাট করে থামানো হচ্ছে মালবাহী ট্রাক,লরী,পিকআপ,বাসসহ ছোট বড় অসংখ্য যানবাহন।অপরিকল্পিত ও অবৈধ এই পার্কিং এর ফলে প্রায়শ ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।ফলে কাটছে না দূর্ঘটনার আশঙ্কা।

সর্বশেষ ৮  জুলাই  সীতাকুণ্ড উপজেলার পৌরসদরের টেকনো ফিলিং স্টেশন এলাকায় উল্টো পথে আসা দুটি ব্যাটারি চালিত রিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন গুরুতর আহত হয়।এর পর ১২ জুলাই একই স্থানে ঢাকা মুখী রোড়ে একটি ট্রাককে  একটি মালবাহী লরী পিছন থেকে বেশ জোরে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় ড্রাইভার ও হেলফারসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়।এভাবেই অহরহ ঘটছে ছোট বড় অসংখ্য দূর্ঘটনা।আর এসব ঘটনার নেপথ্যে দায়ী সীতাকুণ্ড উত্তর বাইপাস (বায়তুশ শরফ) এলাকার হোটেলগুলো। আইনকে তোয়াক্কা না করে নিয়মিত গাড়ি থামাচ্ছেন হোটেল মালিকরা।এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ গাড়ি পার্কিং সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী।

যেখানে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এ মহাসড়কে অবৈধভাবে পার্কিং করলে চালককে ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তুু বাস্তবে সে আইন পালিত হচ্ছে না মোটেও।

সূত্রে জানা যায়, টেকনো ফিলিং স্টেশন এর বিপরীতে হোটেল কিছুক্ষণ,আলমগীর হোটেল,খোকন হোটেলসহ ৪ টি হোটেল রয়েছে এ এলাকায়। আর এসব হোটেল মালিকরা দৈনন্দিন গাড়ি থামিয়ে হরদম চালাচ্ছেন ব্যবসা।এদের কারোরই নেই কোন আলাদা পার্কিং মাঠ।মহাসড়কে অবৈধভাবে গাড়ি সাইট করিয়ে চালাচ্ছেন হোটেল বাণিজ্য। রাস্তার অর্ধেক অংশ দখল করে তারা থামাচ্ছেন বড় বড় গাড়ি।ফলে যানজট সৃষ্টিসহ জনদূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব অবৈধ পার্কিং।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এসব গাড়ি প্রায় মহাসড়কের ৩-৪ মিটার জায়গা দখল করে থামছে।ডাবল লাইনে গাড়ি থামাতেও দেখা গেছে। মহাসড়কের পশ্চিম পাশের পাশ্ব সড়কের প্রবেশ পথ রোধ করে থামছে গাড়ি।যার দরুণ গ্রামের ভিতরে গাড়ি নিয়ে প্রবেশের সময় মহাসড়কে অপেক্ষমান থাকতে হচ্ছে।যা একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ।সীতাকুণ্ডের উত্তর বাইপাস থেকে শেখপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ পথজুড়ে থামছে এ গাড়িগুলো।হঠাৎ করে ব্রেক করে এ স্থানে থামার কারণে কখনো পিছনের গাড়ির ধাক্কা, কখনো অভার ট্রেকিং গাড়ির চাপের ধাক্কায় ঘটছে দূর্ঘটনা।

এসব বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ড্রাইভার জানান,আমাদের গাড়ি থামাতে বলছে হোটেলের মালিক।তাই আমরা ভাত খাওয়ার জন্য এসব হোটেলের সামনে থামায়।তারা বলছে মহাসড়কে গাড়ি থামলে সেটা তারা দেখবে।

শুধু গাড়ি থামনো নয় লোক রেখে পতাকা দেখিয়ে গাড়ি থামাচ্ছে এসব হোটেল ব্যবসায়ীরা।কখনো কখনো সংস্কার করছেন সড়কের পাশের জায়গাগুলো যা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন।এ এলাকায় দীর্ঘ গাড়ির লাইনের ফলে পথচারীদের রাস্তা পারাপার ও হাটাচলায়ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

মহাসড়কে এসব গাড়ির অবৈধ পার্কিং এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থায় নেয়নি হাইওয়ে পুলিশ।বারবার সাধারণ নাগরিকের অভিযোগের পরেও গাড়ি থামানো বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন কুমিরা হাইওয়ে থানা পুলিশ। এ বিষয়ে কুমিরা  হাইওয়ে পুলিশের ওসি বলেন সাইদুল ইসলাম বলেন,আমি মহাসড়কে গাড়ি থামা বন্ধ করতে আন্তরিক আছি।হোটেল মালিকগুলোকেও বারবার বলা হচ্ছে যাতে গাড়ি না থামে।তবে তারা ইউনএনও ‘র অনুমতি আছে বলে নিজেদের জাহির করছে।

তবে এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, আমাদের কাছ থেকে হোটেল মালিকদের কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।তারা কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে আমি সে বিষয়ে অবগত নয়।