প্রতিবন্ধী কামরুন্নাহার সন্তানের মুখ দেখে সব ব্যাথা ভুলে গেলেন

প্রতিবন্ধী কামরুন্নাহার সন্তানের মুখ দেখে সব ব্যাথা ভুলে গেলেন

লিটন কুমার চৌধুরী, বিশেষ প্রতিবেদক।।

কামরুন্নাহার ছয় বছর বয়সে ট্রেনে কাটা পড়ে দুটি পা হারিয়ে ফেলে । সেই থেকে প্রতিবন্ধী বনে যাওয়া কামরুনের জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। কিন্তু কোনো একদিন তার পৃথিবী বদলে যাবে- এমন স্বপ্ন দেখে বড় হতে থাকে মেয়েটি। একসময় সুখের সংসারের স্বপ্ন দেখিয়ে কামরুনকে বিয়ে করে পাশে এসে দাঁড়ায় মো. ফরিদ নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু সে সুখ তার বেশিদিন সয়নি। প্রথম সন্তানের জন্মের পর থেকেই অবহেলা করতে শুরু করে স্বামী। তাকে ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করতে থাকেন। তবে মাঝে মধ্যে আসা যাওয়া করতেন। এভাবেই দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হয় দুই পা হারানো মেয়েটি। কিন্তু স্বামীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা তাকে চরম অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলে দেয়। এসময় পাশে এসে দাঁড়ায় এনজিও সংস্থা ইপসা। ইপসার উইশ টু অ্যাকশন প্রজেক্টের স্টাফ শারমিন আক্তার প্রকল্প কর্মকর্তাদের কামরুন্নাহারের কথা জানালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে তার সেবা শুরু করেন তারা। 

সর্বশেষ গত ২৬ জুন প্রতিবন্ধী কামরুন্নাহারের সিজারের মাধ্যমে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সীতাকুণ্ড মডেল হাসপাতালে রেখে তার যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করে ইপসা। সিজারসহ তার যাবতীয় চিকিৎসায় মোট ২৮ হাজার ৫শ ৬৩ টাকা দেয়া হয় উইশ টু অ্যাকশন প্রকল্প থেকে। এর ফলে কোনোরূপ আর্থিক টেনশন ছাড়াই সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরে যান কামরুন্নাহার।

ইপসার উইশ টু অ্যাকশন প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ঘোড়ামরা ওয়ার্ডের মধ্যম ঘোড়ামরা আমীর উজ্জামানের বাড়ির নুরুল আলম ও আনোয়ারা বেগমের মেয়ে কামরুন্নাহারের (৩০) জীবন খুবই কষ্টের। সন্তান সম্ভবা হওয়ার পর তার পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা খুব খুশি।

এদিকে ইপসার সাপোর্ট প্রসঙ্গে কামরুন বলেন, যখন স্বামীর সব থেকে বেশি সাপোর্ট প্রয়োজন ছিল তখন তিনি কোনো খবর নেননি। ইপসা পাশে থাকায় সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে পেরেছি। নইলে এত টাকা কিছুতেই জোগাড় করতে পারতাম না। আমার সমস্ত ব্যাথাও ভুলে গেছি সন্তানের মুখ দেখে। তিনি ইপসার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান ।