স্বর্ণালংকার ভেসে আসছে কক্সবাজার সৈকতে!

স্বর্ণালংকার ভেসে আসছে কক্সবাজার সৈকতে!
স্বর্ণালংকার ভেসে আসছে কক্সবাজার সৈকতে!

কক্সবাজার প্রতিনিধি ।।

করোনা ভাইরাস পর্যটন শিল্পে চরম দূর্দিন আনলেও কক্সবাজারসমুদ্র সৈকতজুড়ে প্রকৃতিকে নিজেকে মেলে দিয়েছে। লকডাউনের কয়েকদিন পর থেকে বালিয়াড়িতে দেখা মিলছে সাগর লতার। আলপনা এঁকে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে লাল কাঁকড়ার দল। সাগরে দেখা মিলছে ডলফিনের ঝাঁকও।

তবে রেড জোনের নিষেধাজ্ঞা শেষ। সুমদ্র তীরে স্থানীয় লোকজনের চলাচল বেড়েছে। এর মধ্যে রটে গেছে সৈকতে নাকি স্বর্ণালংকার ভেসে আসছে। এ খবর ছড়িয়েছে অতি দ্রুত। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বালিতে সোনা খুঁজছেন অনেকেই। বালির দিকে তীক্ষ্ণ চোখ রেখে চালাচ্ছেন নিবিড় তল্লাশি।। তারা শুনতে পেয়েছেন- সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে নাকি ভেসে আসছে অলঙ্কার, ঢেউ বালিতে স্বর্ণালঙ্কার ছুঁড়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে! কয়েকজন বালির মধ্যে সোনার গয়না খুঁজে পেয়েছে, হীরার আংটিও নাকি পেয়েছেন একজন!

এর আগে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হলে বন্ধ হয়ে যায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসা। রাতারাতি খাঁ খাঁ প্রান্তরে রূপ নেয় কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্র এবং বিস্তৃীর্ণ সমুদ্র সৈকত।

সমু্দ্র সৈকতে স্বর্ণালংকার ভেসে আসার খবরে নানা বয়সের মানুষ এসে খোঁজাখুঁজি করছে। এদেরই একজন জসিম উদ্দীন। বাড়ি বাহারছড়া। সৈকতে ডাব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তার দাবি, ''ঢেউয়ের সঙ্গে স্বর্ণের আংটি, চেইন, কানফুলসহ নানা ধরনের গয়না ভেসে আসছে। কোথা থেকে কিভাবে আসছে তা জানি না। আগে কয়েকজন পেয়েছে, আমিও পেয়েছি একটা। পেয়ে বিক্রিও করে দিয়েছি।' কোথায় বিক্রি করেছেন বা কী ধরনের গয়না ছিল বলতে নারাজ তিনি।

শহরের কলাতলী বড়ছড়া এলাকার আবুল কাশেম দাবি করেন, কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি সৈকতের বালিয়াড়িতে একটি হীরার আংটি পেয়েছেন।

'শুনেছি ওই আংটি বিক্রি করে তিনি ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। এ ঘটনা শোনার পর থেকেই আমরা সৈকতে স্বর্ণ খুঁজতে এসেছি। তবে কিছুই পাইনি।' কিন্তু হীরার আংটি পাওয়া ব্যক্তি কে, তার পরিচয় কেউ নির্দষ্ট করে কেউ বলতে পারছে না। শুধু চাউর হওয়া কথাতেই সৈকতে ভিড় করছে লোকজন।

সৈকতের প্রকৃতি ও জীব বৈচিত্র্য  নিয়ে গবেষণা করেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আহমদ গিয়াস। তিনি বলেন, ঢেউয়ে তোড়ে স্বর্ণালংকার ভেসে আসা একটি'রূপকথার গল্প'। এটি এমন হতে পারে যে, লকডাউনের আগে সৈকতে গোসল করতে নেমে কোনো পর্যটকের শরীর থেকে স্বর্ণলাঙ্কার খুলে পড়ে গেছে। পরে কেউ হয়তো এটা পেয়েছেন। সেই গল্পই হয়তো চাউর হয়েছে।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার (এসপি) জিল্লুর রহমান বলেন, সাগরজলে স্বর্ণালংকার ভেসে আসার বিষয়টি অবিশ্বাস্য। তবে জনবহুল সৈকত হিসেবে গোসলের সময় ঢেউয়ের তোড়ে কোনো কোনো পর্যটকের সোনার গয়না হারানোর ঘটনা থাকলে থাকতে পারে।

তিনিআরও বলেন, সৈকতের বালিতে অলঙ্কার খোঁজার ঘটনা নতুন কিছু না। যারা জানে তারা প্রতিদিনই সৈকতের বালিয়াড়ি ও পানিতে এসব খোঁজে। কাজেই সাগর থেকে স্বর্ণ ভেসে আসছে এটা বানোয়াট।