মোংলা উপকুলের অসহায় মানুষের ভরসা ‘জীবন খেয়া’

মোংলা উপকুলের অসহায় মানুষের ভরসা ‘জীবন খেয়া’

মোংলা প্রতিনিধি ।। 

অসহায় ও দুস্থ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে নতুন যাত্রা শুরু করেছে ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন খেয়া’। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে নোঙ্গর করে বানিয়াশান্তা ইউনিয়নের পতিতাপল্লীসহ এ অঞ্চলের গরিব জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ শুরু করেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ‘জীবন খেয়া’। হাসপাতালটি ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একা মাসব্যাপী এ অঞ্চলের মানুষের জন্য কাজ করবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকুলীয় ৯ জেলার ২০টি উপজেলায় এই সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

আঁকাবাঁকা দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে দেশের দক্ষিণে উপকুলীয় এলাকার অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ পৌঁছে দিতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে ভাসমান হাসপাতালের কর্মীরা। শীর্ষস্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন খেয়া’ এই প্রথম মোংলায় পৌঁছে গরিব ও অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কাজ শুরু করে। ভাসমান এ হাসপাতালটি সোমবার রাতে মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে এসে পৌঁছলে কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদের স্বাগত জানান। এ ছাড়া উপক‚লীয় অঞ্চলে কাজ করার লক্ষ্যে এ কাজে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।

ভাসমান হাসপাতালে চক্ষু ও ডেন্টিস্টসহ বিভিন্ন ইউনিটে ৮ জন মেডিকেল অফিসার, সেবিকাসহ অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কর্মী রয়েছে। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এ ভাসমান হাসপাতাল দেশের উপক‚লীয় এলাকার জেলে পরিবার, মৎস্যজীবী ও অসহায় দরিদ্রদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বিতরণ করবে। ‘জীবন খেয়া’ নামের এ হাসপাতালটি আজ মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি ঘোল গ্রামে জেলে পরিবার ও দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিবে।

জীবন খেয়া ভাসমান হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, ডা. পিযুষ রায় বলেন, উপক‚ল অঞ্চলে যে ছিন্নমূল মানুষ রয়েছে, তারা ঠিকমতো শরীরের দেখভাল ও টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না। এলাকার অসহায় এমন অসঙ্গতি মানুষের জীবন মানের দিকে লক্ষ্য করে তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। উপক‚লীয় চরাঞ্চলের এসব গরিব ও অসহায় দুস্থ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে দেশের বিভিন্ন মহৎ মানুষের সকল প্রকার অর্থিক সহায়তায় এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকার অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য এখানে সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, ভাসমান এ হাসাপাতালে আমরা সকল রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিব কিন্তু সর্বপরি অগ্রাধিকার থাকবে শিশু ও বৃদ্ধদের। কারণ সমাজে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষগুলো অবহেলিত থাকে বেশি। এ ছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের দিকে আমাদের বেশি লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে, সংসারে মায়েরাই সব সময় ভালো চিকিৎসা নিতে পারে না তাই শিশু, বৃদ্ধ ও মায়েদের চিকিৎসাসেবা দেওয়াই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। ভাসমান হাসপাতালে ২০টি স্পষ্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, আজ থেকে শুরু করে আগামী দুই মাস আমাদের এ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা।