যে ১০ কারণে রোজা ভেঙে যায়

যে ১০ কারণে রোজা ভেঙে যায়
যে ১০ কারণে রোজা ভেঙে যায়

ইসলাম ডেস্ক ।।

সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকার নাম রোজা। তবে অনেকের জানা নেই কী কী কারণে রোজা ভঙ্গ হয়। এমন ১০টি বিষয়ে আলোকপাত করা হলো।

১. পানাহার বা নাক দিয়ে খাদ্য গ্রহণ : সেটা উপকারী হোক বা অপকারী হোক; হালাল হোক বা হারাম হোক; অল্প হোক বা বেশি হোক রোজা ভেঙে যাবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা ততক্ষণ পানাহার করো যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কারভাবে দেখা যায়।’ (সুরা বাকারা : ১৮৭)

২. কৃত্রিম উপায়ে খাদ্য গ্রহণ : রোজাদার যদি পানাহারের বিকল্প উপায়ে খাবার গ্রহণ করে-রক্ত গ্রহণ; শক্তিবর্ধক স্যালাইন গ্রহণ; এমন ইনজেকশন, যা আহারের কাজ করে অর্থাৎ গ্লুকোজ ইনজেকশন ইত্যাদি।

৩. স্ত্রী সহবাস : রোজা রাখা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হলে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক, তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এই অবস্থায় রোজা ভঙ্গের ফলে ৫টি জিনিস সংঘটিত হয়-ক. কবিরা গুনাহ আর এর ফলে তাকে তওবা করতে হবে। খ. রোজা বাতিল হয়ে যাবে। গ. তাকে ওই দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। ঘ. ওই দিনের রোজা (রমজানের পরে) কাজা করতে হবে। ঙ. বৃহৎ কাফফারা আদায় করতে হবে। আর কাফফারা হলো একাধারে দুই মাস রোজা রাখা অথবা একজন গোলাম আজাদ করা কিংবা ৬০ জন মিসকিনকে একবেলা খাবার খাওয়ানো।

৪. সঙ্গম ব্যতীত অন্য পন্থায় বীর্যপাত : সহবাস ব্যতীত অন্যপন্থায় যদি কোনো রোজাদার যৌনস্বাদ নেওয়ার জন্য স্পর্শকাতর কোনো নারীর সংস্পর্শে আসে, তাকে চুম্বন করে, জড়িয়ে ধরে অথবা হস্তমৈথুন করে ইত্যাদির মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটায়, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। 

৫. ইচ্ছাকৃত বমি : রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে সে যেন পরবর্তী সময়ে রোজা কাজা করে নেয়। (মুসলিম)

৬. হায়েজ-নেফাস : মহিলাদের হায়েজ (ঋতুস্রাব) ও নেফাস (প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ) হওয়া, এমনকি যদি ইফতারের কিছু সময় পূর্বেও হয় তা হলে রোজা ভেঙে যাবে।

৭. দূষিত রক্ত বের করা : দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোজা নষ্ট হবে কি হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে, তবে আসল কথা হলো দিনের বেলায় রোজা থাকা অবস্থায় এ কাজ না করাই উত্তম।

৮. নিয়ত বাতিল : নিয়ত প্রত্যেক ইবাদত তথা রোজার অন্যতম রুকন। আর সারাদিন সে নিয়ত নিরবচ্ছিন্নভাবে মনে জাগ্রত রাখতে হবে যে, আমি রোজাদার। যাতে রোজা না রাখার বা রোজা বাতিল করার কোনো দৃঢ় সংকল্প না করে বসে। বলা বাহুল্য রোজা না রাখার নিয়ত 
করলে এবং তার নিয়ত বাতিল করে দিয়ে সারাদিনের পানাহার না করে উপবাস করলেও রোজা বাতিল গণ্য হবে। সুতরাং আমরা নিয়ত করব এবং নিয়ত রাখব।

৯. মুরতাদ হওয়া : কোনো রোজাদার যদি মুরতাদ হয়ে যায় তবে ওলামায়ে কেরামের সর্বসম্মতিক্রমে তার রোজা বাতিল হয়ে যাবে। অতঃপর সে যদি তওবা করে পুনরায় মুসলিম হয়, তা হলে ওই রোজা তাকে কাজা করতে হবে, যদিও সে ওই দিনে রোজা নষ্টকারী কোনো কাজ বা কোনো জিনিস ব্যবহার করেনি।

১০. বেহুঁশ হওয়া : রোজাদার যদি ফজর থেকে নিয়ে মাগরিব পর্যন্ত বেহুঁশ থাকে, তা হলে তার রোজা শুদ্ধ হবে না এবং তাকে ওই দিনের রোজা কজা রাখতে হবে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;